স্কুলের পোশাক কেলেঙ্কারি!

0
70

স্কুলের পোশাক কেলেঙ্কারি! নিম্নমানের ইউনিফর্ম ফেরত দিতে চাওয়ায় স্কুলে ঢুকে টিচার ইনচার্জকে মারতে উদ্যত সভানেত্রী। আতঙ্কে আটইর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা

বালুরঘাট, ১ ডিসেম্বর —– সরকারী স্কুলের পোশাক কেলেঙ্কারি! নিম্নমানের পোশাক সরবরাহ, প্রতিবাদ করায় স্কুলে ঢুকে টিচার ইনচার্জকে মারতে উদ্যত স্বনির্ভর দলের সভানেত্রী। আতঙ্কিত স্কুলের শিক্ষক -শিক্ষিকারা। সোমবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় পতিরামের আটহর প্রাথমিক স্কুলে। অভিযোগ, নিম্নমানের পোশাক ফেরত নিতে এসে টিচার ইনচার্জের উপর চড়াও হন স্থানীয় এক স্বনির্ভর দলের সভানেত্রী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে স্কুলে ছুটে আসতে হয় পতিরাম থানার বিশাল পুলিশ বাহিনীকে। শেষে ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর অমিতাভ ভট্টাচার্যের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা গেছে পতিরাম থানার অন্তর্গত আটহর প্রাইমারি স্কুলে বর্তমানে ৮৪ জন ছাত্রছাত্রী ও তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে। টিচার ইনচার্জ ব্রতীন রায়ের অভিযোগ—সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী তন্তুজ ও রেমন্ডের কাপড়ে তৈরি মানসম্মত ইউনিফর্ম দেওয়ার কথা থাকলেও যশোদা রানী সংঘ গুরুমন্তী সমবায় সমিতি প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিলি করা হয় অত্যন্ত নিম্নমানের কাপড়ের পোশাক। অভিভাবকদের কাছ থেকে একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি সেই পোশাক গ্রহণে আপত্তি জানান। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই ঝামেলার সুত্রপাত।

অভিযোগ, সোমবার সকালে স্বনির্ভর দলের সভানেত্রী লায়লা আর্জু স্কুলে এসে পোশাক ফেরত নিতে গেলে বস্তা থেকে দুটি পোশাক প্রশাসনিক নির্দেশে আলাদা করে রাখতে যান টিচার ইনচার্জ। তখনই তিনি মারমুখী হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষিকারা। শেষে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন টিচার ইনচার্জ ব্রতীন রায়।

টিচার ইনচার্জ ব্রতীন রায়ের দাবি, “নিম্নমানের পোশাক বিলি করা হচ্ছিল। অভিভাবকদের আপত্তির জেরে পোশাক ফেরত পাঠানোর কথা বলতেই সভানেত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। দুটি পোশাক রেখে দিতে গেলে মারতে উদ্যত হন।” এ বিষয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

অভিভাবিকা টুলটুলি হালদার ও চায়না কর্মকারের অভিযোগ আরও স্পষ্ট—“এই পোশাক আমাদের ছেলেমেয়ের গায়ে দেওয়ার মতো নয়। প্রতিবাদ করতেই সভানেত্রী চড়াও হয়েছেন টিচার ইনচার্জের উপর। আমরা বিচার চাই। অবিলম্বে মানসম্মত পোশাক দেওয়া হোক।”

অন্যদিকে, সভানেত্রী লায়লা আর্জু অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “প্রশাসনিক নির্দেশে পোশাক ফেরত নিতে গিয়েছিলাম। টিচার ইনচার্জই বরং আমাদের হেনস্থা করেছেন। অপমান করেছেন।

ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর অমিতাভ ভট্টাচার্য। তবে তাঁর তৎপরতার ফলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে দাবি স্থানীয়দের।

সরকারি স্কুলে ইউনিফর্ম সরবরাহে এমন অনিয়ম এবং সেই ইশ্যুতে শিক্ষকের উপর স্কুলে ঢুকে আক্রমনের ঘটনা শিক্ষাঙ্গনে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। অভিভাবক ও শিক্ষক শিক্ষিকারা এখন একটাই দাবি তুলেছেন স্বচ্ছ তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও সঠিক গুনগত মানের পোশাকের নিশ্চয়তা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here