পুজো নিয়ে গোষ্ঠীবাজি! নদী থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ।

0
495

পুজো নিয়ে গোষ্ঠীবাজি! নদী থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ। খুনের অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা বালুরঘাটের উত্তমাশায়।

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৫ অক্টোবর ————– পুজো নিয়ে ক্লাবের গোষ্ঠীবাজি! নদী থেকে উদ্ধার নিখোঁজ যুবকের দেহ। বুধবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় বালুরঘাটের উত্তমাশা এলাকায় । ঘটনা নিয়ে সরাসরি খুনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মৃত যুবকের পরিবারের লোকেরা। একই অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রতিবেশীরাও। যদিও এই ঘটনার পরেই দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই যুবকের নাম রুদ্র বিশ্বাস(২৭)। বাড়ি বালুরঘাট শহরের উত্তমাশা এলাকায়। নবমীর রাত থেকে আচমকায় নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল সে। এদিন সাতসকালে শহরের সাহেব কাছাড়ি এলাকায় আত্রেয়ীর ঘাট থেকে নদীতে ভেসে থাকা অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার হতেই তুমুল হইচই পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়েই তড়িঘড়ি এলাকায় পৌছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। জানা যায়, বেশ কয়েকবছর ধরেই উত্তমাশা এলাকায় বাড়বাড়ন্ত হয়েছে অবৈধ বেটিং এর রমরমা কারবারের। যাকে ঘিরেই কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়েছিল ওই ক্লাব বলে সুত্রের খবর। আর এর জেরে ক্লাবের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় প্রতিনিয়তই চলছিল ঠান্ডা লড়াই। দুর্গাপুজোকে ঘিরে যে লড়ায়ের মাত্রা আরো কিছুটা বেড়ে যায়। এরই মাঝে অষ্টমীর রাতে মদ্যপ অবস্থায় এলাকার এক বাসিন্দা নিতাই সাহার বাড়ির সামনে কোল্ড ডিঙ্কসের বোতল ভাঙে ধ্রুব নামে ওই যুবক। যাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। নবমীর দিনই যা নিয়ে মৃত ধ্রুবর বিরুদ্ধে বালুরঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নিতায়ের স্ত্রী। এরপর ওইদিন রাত থেকে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যায় ধ্রুব। যা নিয়ে দশমীর সকালে একটি নিখোঁজের অভিযোগও দায়ের করেন মৃত ধ্রুবর বাবা রঞ্জিত বিশ্বাস। এরপর এদিন সকালে নদী থেকে তার দেহ উদ্ধার হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার পরিবারের লোকেরা। ঘটনা নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় উত্তমাশা এলাকায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এলাকায় মোতায়ন করা হয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী। যদিও এই ঘটনা নিয়ে এলাকার ছয় যুবকের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের অভিযোগ তুলেছেন মৃত ধ্রুবর বাবা রঞ্জিত বিশ্বাস। তার অভিযোগ, পরিকল্পনা মাফিক খুন করা হয়েছে তার ছেলেকে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে মৃতর বাবা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাদের অধিকাংশই যুক্ত রয়েছে অবৈধ ওই বেটিং কারবারে। তবে কি এই ঘটনার পিছনে শুধু বোতল ভাঙার কারন যুক্ত ? না অন্য কোন অবৈধ কারবার ? যা নিয়েই উদ্ধার হওয়া যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।

মৃত যুবকের বাবা রঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, নবমীর রাতেই ছেলের সাথে শেষ দেখা হয়েছিল। তারপর থেকেই রুদ্রকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এদিন নদী থেকে তার ছেলের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিকল্পনা করেই তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে এলাকার ছয়জন যুবক জড়িত রয়েছে।

অভিযুক্তদের তরফে পারমিতা সাহা বলেন, রুদ্রর সাথে তাদের কোন ঝামেলা ছিল না। কিন্তু অষ্টমীর রাতে কেন তাদের উদ্দেশ্য কোল্ড ড্রিংকসের বোতল ছুড়েছিল তা তারাও অবাক হয়েছে। ঘটনা নিয়ে তারা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু এদিন যে ঘটনা সামনে এসেছে তাতে তারাও অবাক হয়েছেন। ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের শাস্তি দিক প্রশাসন।

প্রতিবেশী প্রলয় ঘোষ বলেন, পুজোর মধ্যে এমন একটি ঘটনা তাদের হতবাক করেছে। তারা চান পুলিশ তদন্ত করে সঠিক ঘটনা বের করুক এবং দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিক।

প্রত্যক্ষদর্শী রাজু মহন্ত বলেন, এদিন সকালে নদীতে এক যুবককে ভেসে থাকতে দেখেছেন তারা। পুলিশ এসে তার দেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here