শীতল চক্রবর্তী হরিরামপুর, ২৬ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুর:-১০০ দিনের মাদুর চাষে প্রকৃত কৃষকদের টাকা না দিয়ে প্রধানসহ তাঁর ঘনিষ্ঠদের ব্যাংকের অ্যকাউন্টে দেবার অভিযোগ তুলেছেন প্রকল্পের কাজে চাষ করা বাসিন্দারা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর হরিরামপুর থানার বাগিচা পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।বাসিন্দারা টাকা ফেরত সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান ও উপ– প্রধানের বিরুদ্ধে এমন সরকারি টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় বিরোধী রাজনীতি দলের সদস্যদের পাশাপাশি শাসকদলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অভিযুক্ত প্রধান অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।কেন হরিরামপুর ব্লক জুড়ে এত সরকারি টাকা হরিলুট চলছে কি করছে শাসকদলের ব্লকের নেতারা সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
বহুদিন ধরেই হরিরামপুর ব্লক এর বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উপপ্রধানেরা মিলে তাদের অনুগামীদের দিয়ে সরকারি টাকা হরিলুট করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। কোথাও কাজ হয়েছে আর সেই কাজের ১০০ দিনের টাকা পেয়েছেন প্রধান উপপ্রধানের ঘনিষ্ঠরা। সে বিষয়ে লিখিত অভিযোগ রাজ্যের প্রশাসন প্রধান থেকে শুরু করে জেলাশাসক থেকে এমন জায়গা নেই বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগ জানাননি। নতুন করে আবার ১০০ দিনের মাদুর চাষে হরিরামপুর ব্লকের বাগিচা পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকার বাসিন্দারা চাষ করলেও অভিযোগ, বাগিচা পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গুলজার হোসেন, উপপ্রধান সহ তার কিছু আত্মীয়সহ অনুগামীদের একাউন্টে সেই টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা। ইতিমধ্যেই পুকুর টেন্ডারে অনিয়ম সহ একাধিক ইস্যুতে বাগিচা পুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস দীর্ঘ সময় ধরে ঘরোয়া করে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন বহু গ্রামবাসীরা। পরে প্রশাসনের সহযোগিতায় বেশ কয়েক ঘন্টা পরে সমস্যা সমাধান বাসিন্দাদের বিক্ষোভের।
ফের মাদুর চাষী এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান সহ তার কিছু অনুগামীদের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসী আশরাফুল আলম, মাধবী ঘোষেরা গ্রামবাসীর অভিযোগ করে জানিয়েছেন, টাকা আমাদের না দিয়ে প্রধান তার পছন্দের লোকজনদের দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। টাকা ফেরত সহ প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিক সেই দাবি জানাই। বালুরঘাটের সাংসদ ডাক্তার সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, সব জায়গায় সরকারি টাকা হরিলুট চলছে।মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না তেমনি তৃণমূল কাটমানি ছাড়া বাঁচতে পারে না, সেটা আরো একবার প্রমান হলো। বিষয়টি আমি যথাস্থানে জানাবো। হরিরামপুরের বিধায়ক রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ব্লক জুড়েই বেশিরভাগ পঞ্চায়েতের সরকারি টাকা হরিলুট চলছে। প্রশাসন করার ব্যবস্থা নিক সেটাই চাই। হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মধুমিতা রায় জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন, যারা এমন সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে সে যে কেউ হোক না কেন প্রশাসন তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নিক সেটাই চাই।
বাগিচা পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অভিযুক্ত প্রধান গুলজার হোসেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মহকুমা শাসক মানবেন্দ্র দেবনাথ জানিয়েছেন; শুনেছি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হরিরামপুর বাসীর অভিমত বিগত দিনগুলিতে শাসকদলের গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে এমন অভিযোগ উঠলেও ব্লক তৃনমূলের সভাপতি হাতেমালি কেন সেই সমস্ত ঘটনার প্রতিবাদ করছেন না।অনেকের মতে বয়সের কারণে নাকি তিনি নিচতলায় এমন ঘটনায় হাত মেলানোর জন্য সমস্ত পঞ্চায়েতের দেখভালের কাজ তিনি ঠিকমতন করছেন না বলেই এমন দুর্নীতি শাসকদলের ওই সমস্ত পঞ্চায়েত স্তরে নেতারা বন্ধ করতে পারছেন না। তবে প্রশাসন কেউ এ ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে অভিমত পোষণ করেছেন হরিরামপুর ব্লকের বাসিন্দা।
এখন দেখার এটাই যে,এই ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সকলেই।