সমস্যায় পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলা বিভিন্ন বনাঞ্চলের বন্যপ্রাণীরা

0
87

জলপাইগুড়ি:-

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব তো রয়েছেই। তার ওপর চলতি বছর গ্রীস্মের দাবদাহ, পর্যাপ্ত বৃস্টির অভাবও সঙ্গী। এসবের জেরে সাধারণ মানুষ যেমন নাজেহাল, তেমনি সমস্যায় পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলা বিভিন্ন বনাঞ্চলের বন্যপ্রাণীরাও।

জলপাইগুড়ি জেলার কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজে ঘেরা বনাঞ্চল। তা সে গরুমারা জাতীয় উদ্যান হোক, বা চাপড়ামারি অভয়ারণ্য। এছাড়াও মোরাঘাট, পানঝোড়া, খুনিয়ার মত ছোট ছোট বনাঞ্চল রয়েছে। আর এইসব বনাঞ্চলে রয়েছে বন্যপ্রাণীদের বিশাল সম্ভার। হাতি,গণ্ডার, বাইসন,চিতাবাঘ, হরিণ থেকে শুরু করে হরেক প্রজাতির বন্যপ্রাণী। মাঝেমধ্যেই দেখা যায় এসব বন্যপ্রাণীরা খাবারে খোজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ফলে মানুষের সঙ্গে বন্যপ্রাণীদের সংঘাতের জায়গা তৈরি হচ্ছে। অভিযোগ ওঠে জঙ্গলে প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবেই বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসছে। এই গ্রীস্মে দেখা দিয়েছে আরেক নতুন সমস্যা। তা হল পর্যাপ্ত জলের অভাব। দেখা যাচ্ছে বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতিরা দলে দলে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয় সংলগ্ন নদীতে চলে আসছে। কখনো দেখা যাচ্ছে শতাধিক হাতির দল তিস্তা নদীর জলে গা ঢুবিয়ে বসে রয়েছে। আবার কখনো দেখা যাচ্ছে জলঢাকা নদীর জল পান করতে চলে এসেছে হাতি।

এর কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, বনাঞ্চলের মধ্যে থাকা ছোট ছোট নদী, ঝোড়াগুলির জল শুকিয়ে যাওয়া বা জলস্তর একেবারে নেমে যাওয়া। একদিকে যেমন বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাচ্ছে, তেমনি চলতি মরশুমে তীব্র দাবদাহ এবং বৃস্টির অভাবও রয়েছে। যার ফলে বনাঞ্চলের এই ছোট নদী, ঝোরা বা জলাশয়গুলির এই অবস্থা। বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতি বা গণ্ডারের মত বড় প্রানীদের ক্ষেত্রে জল শুধু পানের জন্য প্রয়োজনীয় এমনটা নয়। তীব্র গরম থেকে স্বস্তী পেতে এই বড়মাপের প্রানীগুলি জলে স্নান করে বা গা ডুবিয়ে বসে থাকে। কিন্তু বর্তমানে বনাঞ্চলের নদী বা ঝোড়াগুলিতে জলের যা অভাব তাতে হাতির মত বন্যপ্রাণীরা সমস্যায় পড়ছে। ফলে তারা জলের খোজে বনাঞ্চল ছেড়ে চলে আসছে জনবসতি সংলগ্ন নদীগুলিতে। আর এতে করে মানুষ, হাতি সংঘাতের সম্ভাবনা আরও বাড়ছে। অন্যদিকে, বনদফতরের পোষা ২৭টি কুনকি হাতিও রয়েছে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে। তাদেরও নিয়মিত স্নান করাতে হয় গরমের দিনে।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমী এবং প্রাক্তন বনকর্মীরা।
প্রাক্তন বনকর্মী এবং পরিবেশপ্রেমীরা এই সংকটের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু পথও বাতলে দিয়েছেন। যেমন বনাঞ্চলের ভেতরে আরও বেশি করে কৃত্রিম জলাশয় তৈরী করা, জলের উচু রিজার্ভার তৈরী করা, জঙ্গল সংলগ্ন বড় নদীগুলি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে বনাঞ্চলের জলাশয়গুলিতে জল পৌছানোর ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
বনদফতরের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তারা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরী রয়েছেন। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ফাণ্ড থেকে বনাঞ্চলের ভেতরে থাকা জলাশয় এবং জালাধারগুলির সংস্কার করা হয়েছে। আরও অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বন্যপ্রাণীদের সুবিধের জন্য। কুনকি হাতিদের প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখা হচ্ছে বলে দাবি বনদফতরের।
ভিস বাইট👇

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here