প্রেমে বাধা! তালা বন্ধ ঘর থেকে প্রেমিকের মায়ের দেহ উদ্ধার কে ঘিরে রহস্য

0
276

প্রেমে বাধা! তালা বন্ধ ঘর থেকে প্রেমিকের মায়ের দেহ উদ্ধার কে ঘিরে রহস্য। বালুরঘাটের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সরকারি আবাসনের ঘটনায় তুমুল হইচই

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৩০ জুন ———— প্রেমে বাধা! তালাবন্ধ ঘর থেকে প্রেমিকের মায়ের দেহ উদ্ধার কে ঘিরে রহস্য। খুনের অভিযোগ পরিবারের লোকেদের। শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাটের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সরকারী আবাসনে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ওই আবাসনের স্থায়ী বাসিন্দা তথা প্রেমিক তথা শোভন লাল শীল।

পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই মহিলার নাম কল্পনা রানী শীল (৪৭)। বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার কামাখ্যাগুড়িতে। শনিবার রাতে বালুরঘাটের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সরকারী আবাসনের তালাবন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই মহিলার মৃতদেহ। কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সুত্রের খবর অনুযায়ী, জলপাইগুড়ির কামাখ্যাগুড়ির বাসিন্দা তথা জেল কর্মী শোভন লাল শীল কর্মসূত্রে বেশ কয়েক বছর ধরেই বালুরঘাটের ওই সরকারী আবাসনে ছিলেন। এদিকে একাকি ছেলেকে দেখভাল করবার জন্য মাত্র কয়েকমাস আগে কামাখ্যাগুড়ি থেকে ছুটে এসেছিলেন শোভনের মা কল্পনা রানী শীলও। যে আবাসনেই চলছিল মা ও ছেলের সুখের সংসার। কিন্তু এরই মধ্যে মা কল্পনা রানী শীল জানতে পারেন ছেলের গোপন প্রেমের কাহিনী। জেলের এক মহিলা কর্মী তথা ওই আবাসনেরই এক মহিলার সাথে ছেলে শোভন যে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে তা উপলব্ধিও করেন মা। আর যা নিয়েই বেশকিছুদিন ধরে চলছিল একটা পারিবারিক অশান্তি। এরই মাঝে শনিবার শোভনের আচমকা অনুপস্থিতি লক্ষ্য করেন কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কতৃপক্ষ। যা নিয়েই লিখিত অভিযোগ জানিয়ে বালুরঘাট থানার দ্বারস্থ হন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। এরপর রাতেই ওই আবাসনে ছুটে যান বালুরঘাট থানার আইসির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী। তালা বন্ধ ঘর থেকে বের করা হয় ওই মহিলার মৃতদেহ। যাকে ঘিরে তুমুল হইচই পরিস্থিতি তৈরি হয় ওই এলাকায়। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় মৃতার ছেলে শোভন লাল শীলও। বন্ধ রয়েছে তার সমস্ত মোবাইল ফোনের সুইচও। যা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছে তার পরিবারের লোকেরাও। তবে কি কারণে ওই মহিলার এমন রহস্যমৃত্যু এবং ঘটনার পর থেকে আচমকা কেনই বা নিখোঁজ রয়েছে তার ছেলে, যা নিয়েই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। তবে এই ঘটনা নিয়ে সরাসরি খুনের অভিযোগ তুলেছেন মৃতার স্বামী সহ তার পরিবারের লোকেরা। যদিও এনিয়ে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বালুরঘাট থানায়। এদিকে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনা তদন্তে নেমেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে।

বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার দেবাশীষ মন্ডল বলেন, জেলের কর্মী শোভনলাল ঘরে তালা মেরে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। যেখান থেকে তার মায়ের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খুন না অন্য কিছু তা পুলিশি তদন্তেই উঠে আসবে।

মৃতার স্বামী সুবীর চন্দ্র শীল ও এক আত্মীয় পরিতোষ শীল বলেন, ময়নাতদন্তের মাধ্যমেই উঠে আসবে প্রকৃত ঘটনা। প্রাথমিকভাবে তাদেরও মনে হচ্ছে খুন করা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে ছেলে শোভন লালের সাথে অপর একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ককে ঘিরে অশান্তি চলছিল। তবে সেই ঘটনার কারণেই খুন হতে হলো কিনা, বা এর পিছনে কারা জড়িত রয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করলেই সত্য উদঘাটন হবে।

আবাসনের এক প্রতিবেশী মিঠু রায় বলেন, রাতে আবাসনে পুলিশ এসেছিল। পাশের ঘরের দরজা ভেঙে এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে খুন না অন্য কিছু তা তাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here