একা হাতে ঘরের কাজ করার পাশাপাশি, সময়মতো পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করেছে দীপশিখা লামা

0
120

আলিপুরদুয়ার: সংসারের হাল ধরতে ভিনরাজ্যে পারি দিয়েছেন বাবা, মা চা বাগানের শ্রমিক, সকাল হতেই বাগানের কাজে বেরিয়ে পড়েন।এরপরই একা হাতে ঘরের কাজ করার পাশাপাশি, সময়মতো পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করেছে দীপশিখা লামা। সে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের গাঙ্গুটিয়া চা বাগানের গুম্ফা লাইনের বাসিন্দা।উচ্চমাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৩৮।সে কালচিনি হিন্দি হাইস্কুলের ছাত্রী। চা বাগানের মেয়ে দীপশিখা লামার এরূপ ফলাফলে খুশি তার পরিবারের সদস্যদের থেকে শুরু করে এলাকার বাসিন্দারাও। দীপশিখার বাবা পূর্বে বাগানের শ্রমিক ছিলেন, তবে সংসারের হাল ধরতে ভিনরাজ্যে পারি দিয়েছেন তিনি।আর মা এখনও কাজ করছেন বাগানে। ফলে একা হাতেই ঘর সামলাতে এবং ছোট বোনকে দেখাশোনা করতে হতো দীপশিখাকে। এর মাঝেই সময় বের করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতো সে।স্কুল শিক্ষক ও গৃহ শিক্ষকদের সহায়তায় এবার উচ্চমাধ্যমিকে ৪৩৮ নম্বর পেয়েছে সে। যারমধ্যে হিন্দিতে ৮৫, ইংরেজিতে ৯০, ভূগোলে ৮৫, ইতিহাসে ৮৪ এবং পলিটিক্যাল সাইন্সে ৯৪ নম্বর পেয়েছে দীপশিখা।আগামীতে পলিটিক্যাল সাইন্সে অনার্স করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি আমলা হতে চায় সে।

এ বিষয়ে দিপশিখার মা শ্যামনা লামা বলেন, ‘দুই মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য আমরা কষ্ট করছি। ঘর সামলানোর পাশাপাশি দীপশিখা যে এত ভালো ফল করবে তা আমরা সত্যি ভাবিনি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে চায় আমরা করবো। ‘

অন্যদিকে, দীপশিখা লামা বলেন, ‘মা বাগানে কাজে যাওয়ায় ঘরের কাজ করতে হতো।ফলে নিয়মিত সময় করে পড়াশোনা করা হতো না।তবে পরীক্ষার কয়েক মাস আগে থেকে সব ভুলে কয়েকঘন্টা পড়াশোনা করেছি, আর তারই ফল হয়তো আমার এই নম্বর।পরিবারের সদস্যরা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়তায় এই অর্জন আমার।’

এক চা বাগানের মেয়ে এরূপ ফল করায় খুশি এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও। রবিবার দীপশিখার বাড়ি এসে তাকে এবং তার মা সংবর্ধনা জানান স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য মিনা নাগ। তিনি বলেন, ‘চা বলয়ের মেয়েরাও এখন সবক্ষেত্রে আগে রয়েছে। দীপশিখার এরূপ ফলাফলে আমরা সকলেও খুব খুশি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here