চা শিল্পে ঘনীভূত সংকট

0
28

জলপাইগুড়ি:-

ডুয়ার্সের রাস্তায় জলপাইগুড়ি’তে প্রবেশ করলেই চোখ জুড়িয়ে যেত চা বাগানের সবুজ গালিচার দৃশ্যে। এখন সেই সবুজ গালিচা ঝলসে গিয়ে কালচে-লাল রঙে পরিণত হয়েছে। সৌজন্যে রুদ্রদেবের প্রখর তেজ। চা শিল্পে ঘনীভূত সংকট।

ভালো মানের চা পাতা উৎপাদনের জন্য ১৮ডিগ্রি থেকে ৩০ডিগ্রি তাপমাত্রা আদর্শ বলে গণ্য করা হয়। পাশাপাশি প্রয়োজন পর্যাপ্ত বৃস্টি। যদিও আবহাওয়ার চিত্র প্রায় উলটো। জলপাইগুড়ি তথা ডুয়ার্সে গোটা এপ্রিল মাস জুড়েই সুর্যদেবের তেজ রণংদেহী মেজাজে রয়েছে। তাপমাত্রার পারদ ঘোরাফেরা করছে ৩৫ ডিগ্রি থেকে ৩৮ডিগ্রি পর্যন্ত। মাসের প্রথম দিকে দু-এক পশলা বৃস্টির দেখা মিলেছিলো তারপর থেকে দেখা নেই বৃস্টিরও। ফলে একদিকে, তীব্র দাবদাহ, অন্যদিকে অনাবৃস্টি, এই দুই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে জলপাইগুড়ি তথা ডুয়ার্সের অর্থনীতির অন্যতম ভিত চা শিল্প। বাগানে গেলে দেখা যাবে সূর্যের প্রখর তেজে ঝলসে গিয়েছে চা পাতা। সবুজ গালিচার বদলে কালচে-লালপাতার সমাহার। তার ওপর শুরু হয়েছে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গের উপদ্রব। তার কারণও তীব্র গরম এবং বৃস্টির অভাব। পাতা বাচাতে ব্যাবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক সার, কীটনাশক। কৃত্রিম সেচ ব্যবস্থাও রয়েছে বাগানগুলিতে। কিন্তু আবহাওয়ার প্রতিকুলতার কাছে তার কোনোটাই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নয়। আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনার জেরে গত মরশুমেও চা শিল্পে ক্ষতি হয়েছিলো। তবে এবারে পরিস্থিতি আরও বেশি সংকটজনক বলে দাবি চা শিল্প মহলের। উদ্ভুত পরিস্থিতে প্রায় ৪০% কমে গিয়েছে চায়ের উৎপাদন। অন্যদিকে, খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দুদিক থেকেই সংকটের মুখে চা শিল্প। চা শিল্প মহলের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সাতদিন আবহাওয়ার এই চিত্র বজায় থাকলে বিরাট আর্থিক সংকটের মুখে পড়বে এমনিতেই ধুকতে থাকা এই চা শিল্প। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। সেচ ব্যবস্থা এবং কীটনাশক কেনার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া, খোলা বাজার এবং নীলামের ক্ষেত্রে চায়ের দাম বাড়ানোর মত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে দাবি চা শিল্প মহলের। তবে এসবের পরেও সমস্যা মিটবে না যদি না প্রকৃতি এবং আবহাওয়া সদয় না হয়। একমাত্র প্রকৃতির আশির্বাদ “রিনিঝিনি বৃস্টি” আর সূর্যদেব “শান্ত” হলেই ফের সবুজে ঝলমল করে উঠবে চা বাগান, চা গাছের মত চাঙ্গা হয়ে উঠবে চা শিল্পও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here