সাদিকুল ও সুকান্তর ততপরতায় ভারতে ফিরলো তিন বন্দী

0
1049

সাদিকুল ও সুকান্তর ততপরতায় ভারতে ফিরলো তিন বন্দী, বাংলাদেশে বন্দী থাকা ছেলেকে পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিল দুদেশের সরকার। খুশির হাওয়া হিলিতে

পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ১৩ জুলাই–––  সাদিকুল ও সাংসদ সুকান্তর হস্তক্ষেপে ভারতে ফিরলো তিন বন্দী। দীর্ঘ কয়েক বছর বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে ফিরে আবেগে আপ্লুত  অসহায়  এক বৃদ্ধ পিতামাতা। মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলির আন্তর্জাতিক ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় । 

জানাগেছে, বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলির ধরন্দা গ্রামের বাসিন্দা বিনোদ দেবনাথ। বিনোদবাবু স্ত্রী ছবি দেবনাথ ও তাদের একমাত্র  ছেলে মানিক দেবনাথকে নিয়ে থাকতেন।  ২০১৯ সালের ৮ই মার্চ বাড়ি থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে আর ফেরেনি তাদের একমাত্র সন্তান মানিক দেবনাথ (৩২)। বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার আগে বেশ কিছুদিন মানসিক অবসাদে ভুগছিল বলে জানা যায়। অনেক খোজা খুজির পর তারা জানতে পারে মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় পথ ভুলে বাংলাদেশে চলে যায় সে । ঘটনার পর ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ জানায় ওই দম্পতি । সীমান্ত লাগোয়া হওয়ায় পরে তারা জানতে পারেন বাংলাদেশের জেলে তাদের ছেলে  বন্দি  রয়েছে।  পাসপোর্ট করে ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে  বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানায় গেলেও  বৃদ্ধ দম্পতি  জানতে পারেন অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে মানিকের ১ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সেই দেশের সরকার । বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয় অসহায় দম্পতিকে । এরপরেই সারা বিশ্বে করোনার লকডাউন শুরু হয় । দেখতে দেখতে একবছর পেরিয়ে  আরো একবছর হয়ে গেলেও  তাও ছেলেকে ফিরে পাননি ওই দম্পতি । জেলা প্রশাসন থেকে  বাংলাদেশ হাইকমিশন সর্বত্র দরবার করেও কোন ফল পাননি তারা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও লেখালেখি হয় এই বিষয়ে। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ছেলেকে ফেরাতে মরিয়া হন বীরভুমের বাসিন্দা সাদিকুল ইসলাম। বাংলাদেশ থেকে ভারত একাধিক সরকারী অফিসে যোগাযোগ করে ততপর হন সাদিকুল। এদিকে একমাত্র ছেলেকে ফিরে পেতে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। বিষয়টি জেনেই সাংসদ সুকান্ত মজুমদার দ্রুত দিল্লিতে বিদেশমন্ত্রকে দরবার করে। আর এরপরেই এদিন বৃদ্ধ দম্পতী তাদের ছেলেকে ফিরে পায়। দুদেশের ততপরতায় হিলি চেকপোস্টে এদিন ওই বৃদ্ধ দম্পতির হাতে ছেলেকে তুলে দেওয়া হয়। এদিন একই সাথে ইসলামপুরের কুচিলা এলাকার দুই বাসিন্দা তাজু মহম্মদ এবং মাস্টার একেল’কেও বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে । যদিও এইজন্য সাংসদ ও সংবাদমাধ্যমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা।
এদিন মানিক দেবনাথ তার বাংলাদেশের জেলে থাকার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন সংবাদমাধ্যমের কাছে।


সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, বেশ ভাল লাগছে মানিককে ফিরিয়ে আনতে পেরে। তবে আরো বেশি খুশি হতাম যদি আরো আগে তাকে ওদেশের জেল থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারতাম।


বাবা বিনোদ দেবনাথ জানিয়েছেন, সাংসদকে ধন্যবাদ দেবার ভাষা নেই । ছেলেকে ফিরে তিনি আনন্দে আত্মহারা। 

হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওসি শিপ্রা রায় বলেন, অবৈধভাবে সীমান্ত পার হবার কারনে বাংলাদেশে তারা বন্দী ছিলেন। এদিন তিনজনকে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here