হিলিতে স্বর্ন ব্যবসায়ীকে শুট আউট, বাড়ি থেকে একশো মিটার দূরে দুস্কৃতিরা ঘিরে ধরে ব্যবসায়ীকে, সুরক্ষার দাবিতে তিওড়ে ব্যবসা বন্ধের ডাক
পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ৬ জুলাই––– দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন করল দুস্কৃতিরা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের হিলি থানার জোত তিওর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ব্যবসায়ীর নাম প্রদীপ কর্মকার। এই ঘটনায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা প্রদানের দাবীতে ব্যবসা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে তিওড়ে।

জানাগেছে, তিওরের বাসিন্দা প্রদীপ কর্মকার তার সোনার দোকানের হালখাতা করে মোটর বাইকে চেপে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে মাত্র একশো মিটার দুরত্বে মোটর বাইকে চেপে আসা দুস্কৃতিরা পথ আটকায় ওই ব্যবসায়ীর। ঘিরে ধরে ব্যবসায়ী প্রদীপ কর্মকারকে গুলি চালায় দুস্কৃতিরা। তাঁদের কাছে থাকা জিনিস পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করলেও তাতে সফল হতে পারেনি দুস্কৃতিরা বলে দাবি মৃতর স্ত্রীর। এদিকে রাতের অন্ধকারে এমন গুলির শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা জড় হতেই পালিয়ে যায় দুস্কৃতিরা। রক্তাক্ত ও গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যবসায়ীকে প্রথমে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতায় রেফার করা হলে, নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়েছে। একইসাথে থাকলেও মৃতর স্ত্রীর শরীরে তেমন কোন আঘাতের চিহ্ন মেলে নি। তিওর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দুরত্বে দুস্কৃতিদের এমন শুট আউটের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুস্কৃতিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে। এদিকে এই ঘটনার পরেই এলাকার আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা রবিবার ব্যবসা বন্ধের ডাক দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এদিন সকালে এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি কথা বলা হয়েছে পরিবারের লোকেদের সাথেও। ঘটনাস্থল থেকে একটি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে । কাউকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।
তিওড় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সমীর মহন্ত জানিয়েছেন, এমন ঘটনা এর আগে তাদের এলাকায় হয়নি। ঘটনার জেরে সকল ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে ভুগছেন । পুলিশে লিখিত অভিযোগও করেছেন তারা । ব্যবসায়ীদের সুরক্ষার দাবিতে আগামী কাল ব্যবসা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে ।
মৃতর আত্মীয় সুবোধ চন্দ্র কর্মকার ও প্রতিবেশী উজ্জ্বল কর্মকার রা বলেন, সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী প্রত্যেককেই সুরক্ষা দেবে পুলিশ প্রশাসন । কিন্তু হিলির মানুষ আজ আতঙ্কিত। ব্যবসা করে বাড়ি ফেরার পথে দুস্ক্রতিরা তার প্রান কেড়ে নিয়েছে। এর আগে এমন ঘটনা তাদের এলাকায় কখনই হয়নি। তারা চান দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
পেশায় স্বর্ন ব্যবসায়ী হলেও এলাকায় সুদের কারবারী হিসাবেও চিহ্নিত ছিলেন প্রদীপ কর্মকার। ঠিক কি কারনে তাকে খুন হতে হল তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে এলাকায়। ব্যবসায়ীক না অন্য কোন কারন রয়েছে এর পিছনে তা নিয়েও যথেষ্টই গুঞ্জন রয়েছে। ছিনতায়ের উদ্দেশ্য থাকলে কিভাবে ব্যবসায়ীর স্ত্রীর কাছে অক্ষত থাকল টাকার ব্যাগ? যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন কোন টাকা ছিনতায়ের উদ্দেশ্যে নয়, খুন করবার জন্যই দুস্কৃতিরা এসেছিল ওইদিন রাতে। স্থানীয়দের এমন মন্তব্যে জোড়ালো হয়ে উঠেছে ওই ব্যবসায়ী খুনের রহস্য।