লোকেশন:- তুফানগঞ্জ
কোচবিহার:- মামা শশুরকে বাবা বানিয়ে দিব্যি ভোটার কার্ড-সহ একাধিক সরকারি নথি তৈরি করেছিলেন বিকাশ দাস। প্রায় এক দশক কেটে গেলেও তেমন কোনও সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়নি। কিন্তু এসআইআর প্রসঙ্গ শুরু হতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই অমল দাসের পরিবাররা রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এই ঘটনায় শুক্রবার বক্সিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অমলবাবু। তাঁদের ভয়, এখন না সে সম্পত্তির দাবি করে বসে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ওই বিকাশ দাস কি আদৌ ভারতের নাগরিক? যদিও থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই গা- ঢাকা দিয়েছেন ওই অভিযুক্ত। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
এদিকে গোটা বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের শালবাড়ি -১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশরাজা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বাঁশরাজা গ্রামের বাসিন্দা অমল দাশের পরিবারই প্রথম বিষয়টি সামনে আনেন।
অমল দাস জানান,“ আমার পাঁচ মেয়ে থাকলেও কোনও পুত্র সন্তান নেই। সম্প্রতি এসআইআর এর কাজ শুরু হতেই নজরে আসে আমাকে বাবা বানিয়ে ভাগ্নি জামাই বিকাশ ভোটার কার্ড সহ অন্যান্য নথি তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু বিকাশের সঙ্গে আমাদের রক্তের কোনও সম্পর্ক নেই। তাদের সামনে আমাদের বনিবানাও নেই।
এরপর না সে আমার সম্পত্তি দাবি করে বসে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। গোটা ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
অমলের অভিযোগ সামনে আসতেই এলাকায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন অনেকে—বিকাশ দাস আদৌ ভারতের নাগরিক কি না?
অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার বিকাশ দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দরজায় ঝুলছে তালা।
প্রতিবেশী প্রসেনজিৎ রাভা বলেন, “আমরা জানি অমল দাসের ভাগ্নি জামাই বিকাশ। বিয়ের পর থেকে এই গ্রামেই ঘরজামাই থাকছে। কিন্তু এসআইআর শুরু হতেই আমরা জানতে পারি, মামাশ্বশুর অমল দাসকে বাবা বানিয়ে সরকারি নথি তৈরি করে ফেলেছে সে। সে বাংলাদেশে কিনা তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু কেন সে এমনটা করল তাও আমাদের কাছে অজানা।”
এমন সরকারি নথি জাল করার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর,অমল দাসের পরিবারের আশঙ্কা—তাঁদের সম্পত্তির উপর দাবি উঠতে পারে কি? যদিও বিকাশের বিরুদ্ধে বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে কি না—তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এলাকাবাসীর বক্তব্য, “এসআইআর নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরই এই ধরনের লুকোনো জালিয়াতি ফাঁস হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করা।”
যদিও বক্সিরহাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।




















