আন্ডারপাসে ডুবে যাবে ১০ গ্রামের যোগাযোগ! বালুরঘাটের বঙ্গিতে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে থমকে গেল হিলি-বালুরঘাট রেললাইন সম্প্রসারনের কাজ

0
73

আন্ডারপাসে ডুবে যাবে ১০ গ্রামের যোগাযোগ! বালুরঘাটের বঙ্গিতে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে থমকে গেল হিলি-বালুরঘাট রেললাইন সম্প্রসারনের কাজ

বালুরঘাট, ২৬ নভেম্বর —- হিলি–বালুরঘাট রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পে আন্ডারপাস নির্মাণকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল বালুরঘাটের বঙ্গী এলাকায়। বুধবার বিকেলে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে থমকে গেল রেলের কাজ। অভিযোগ, রাস্তার স্তর থেকে অনেক নিচে আন্ডারপাস তৈরি হওয়ায় ভবিষ্যতে জল জমে বছরের বেশিরভাগ সময় ডুবে থাকবে এলাকার একমাত্র সংযোগ পথ। সেই আশঙ্কাতেই কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা।

বালুরঘাট থেকে চকরাম যাওয়ার প্রধান সড়কের উপর দিয়েই চলছে রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ। এই পথ দিয়েই নিত্যদিন চলাচল করেন বঙ্গী, নকসা, চকরাম, মাঝিগ্রাম, বানিয়াপাড়া, সাতরাই, চকরামপ্রসাদ, চকসাম সহ প্রায় ১০ থেকে ১২টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। রাস্তা কেটে তার উপর দিয়েই আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি— রাস্তার দু’ধারেই রয়েছে ডোবা জমি। সেখানে নিচু করে আন্ডারপাস হলে অল্প বৃষ্টিতেই তা ডুবে যাবে। তখন নিত্যযাত্রা থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— সকলের যাতায়াত চরম সংকটের মুখে পড়বে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিকল্প রাস্তার কোনও ব্যবস্থা না করেই রেল কর্তৃপক্ষ হঠাৎই আন্ডারপাস নির্মাণে নেমেছে। ফলে মূল সংযোগ পথটি যদি জলবন্দি হয়ে যায়, তবে অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। বুধবার বিকেলে সেই আশঙ্কার জেরে শতাধিক গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান।

বিক্ষোভকারীদের একজন বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, “হাজার হাজার মানুষের চলাচলের এটাই একমাত্র রাস্তা। আন্ডারপাস হলে পুরো এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। একই সুরে সুদেব মহন্ত ও সীতেন বর্মনরা জানান, “এভাবে আন্ডারপাস হলে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া দুর্ভোগে পরিণত হবে। কোনও ভাবেই আমরা এই কাজ চলতে দেব না।”

অন্যদিকে, রেলের আন্ডারপাস নির্মান বিভাগের ম্যানেজার দীপক সিং দাবি করেন, “রেলের গাইডলাইন মেনেই আন্ডারপাস নির্মাণ হচ্ছে। কোথাও জল জমলে তা বের করতে পাম্পসেট ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “সব ব্যাখ্যা দেওয়ার পরও গ্রামবাসীরা বাধা দিয়ে কাজ থামিয়ে দিয়েছেন।”

ফলে একদিকে রেলের দাবি— নিয়ম মেনেই কাজ চলছে, অন্যদিকে কয়েক হাজার মানুষের আশঙ্কা— তাঁদের ভবিষ্যৎ থমকে যাবে। বঙ্গীর আকাশে তাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— উন্নয়ন নামের এই পথ কি সত্যিই আলো আনবে, নাকি নতুন দুর্ভোগের অন্ধকার ডেকে আনবে এলাকায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here