প্রতিশ্রুতি ভাঙার ক্ষোভে ফুঁসছে বালুরঘাটের গোবিন্দপুর! এফসিআয়ের সাইলো গোডাউনের সামনে দিনভর বিক্ষোভ জমিদাতা কৃষকদের
বালুরঘাট, ১৮ নভেম্বর —— বালুরঘাট রেলস্টেশন লাগোয়া গোবিন্দপুর—মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনায় থমথমে। ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার নবনির্মিত সাইলো গোডাউনের সামনে জমিদাতা কৃষকদের বিক্ষোভে কার্যত অচল হয়ে পড়ল গোটা এলাকা। সরকার ও সংস্থার দেওয়া চাকরির প্রতিশ্রুতি ‘কাগুজে’ প্রমাণিত হওয়াতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় জমিদাতারা। অভিযোগ, জমি নেওয়ার সময় প্রতিটি পরিবারকে এক জন করে স্থায়ী চাকরি ও সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে মিলেছে না চাকরি, না জমির পূর্ণ মূল্য। ফলে বাধ্য হয়েই রাস্তা অবরোধে নামতে হয়েছে তাঁদের।
রেলস্টেশন লাগোয়া এফসিআই অনুমোদিত ওই বেসরকারি গোডাউনটির সামনে সকাল থেকেই জড়ো হন বহু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, “প্রলোভন দেখিয়ে” জমি নিলেও সংস্থা প্রতিশ্রুতি রাখার ধারেকাছেও নেই। বিক্ষোভে শামিল সবিতা ওরাও এক্কা, অপুর্ব দাস ও গঙ্গা মিঞ্জিরা ক্ষোভ উগড়ে বলেন, “জমি দেওয়ার সময় স্পষ্ট বলা হয়েছিল—প্রতি পরিবারে একজন করে চাকরি মিলবে। কিন্তু আমরা কেউই কাজ পাইনি। যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁদেরও তিন মাস ধরে নেই বেতন, নেই কোনও জয়েনিং লেটার। জমির সম্পূর্ণ টাকাও আজও হাতে আসেনি।”
কৃষকদের আরও অভিযোগ, প্রথমে তাঁরা জমি দিতে রাজি ছিলেন না। পরে প্রশাসনের অনুরোধে জমি ছাড়তে বাধ্য হন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ তো হয়নি-ই, উপরন্তু তিন মাস ধরেই নাকি কাজ পাওয়া শ্রমিকদের বেতন ঝুলে রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, “এত অন্যায় সহ্য করা যায় না। কোথায় যাব বলুন? তাই বাধ্য হয়েই পথে নেমেছি।”
অভিযোগের জবাবে সাইলো গোডাউনের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ সূত্রধর জানান, “এটি এফসিআই–এর সঙ্গে কোলাবোরেশনে পরিচালিত একটি ইউনিট। দেখভালের জন্য ইতিমধ্যেই ৫-৬ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু শূন্যপদ সীমিত হওয়ায় সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব হয়নি।” জমির ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
জমিদাতা কৃষকদের এই ক্ষোভের জেরে দিনভর বন্ধ থাকে গম বোঝাই মালবাহী ট্রেন খালাসের কাজ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পৌঁছলেও ক্ষুব্ধ কৃষকদের শান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।




















