“স্টার সংবাদের খবরের জের”ভুল রক্তের গ্রুপ আদিবাসী তরুণীকে দেওয়ার স্বাস্থ্য পরিষেবার একাধিক বিষয়ে নির্দেশিকা পাঠালো জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর
শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৪ নভেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুর।এই স্টার সংবাদের খবরের জের, ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় আইসিইউ তে আদিবাসী তরুণী। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালের এমন ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসন রিপোর্ট তলব করেছে জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে। ঘটনার বিষয়ে সংবাদ গত রবিবার প্রকাশ পাবার পরেই তড়িঘড়ি জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর সুদীপ দাস স্থায়ীভাবে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল কালদিঘিতে উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক(২)ডক্টর ওঙ্কারনাথ মন্ডলকে বসিয়েছেন।সেই সঙ্গে সেদিন যারা ভুল গ্রুপে রক্ত দেওয়ার যে ঘটনা ঘটিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল সেদিনের সমস্ত রক্ত সংগ্রহের নমুনাপত্র রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য। যারা যারা সেদিন কাজ করেছে সেই সমস্ত স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীদেরও শো কাজ করার পাশাপাশি টেকনিশিয়ানকে অন্যত্র ট্রান্সফার করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।একইসঙ্গে মহকুমা হাসপাতালে বেডের দায়িত্ব থাকা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিজেশ সাহাকেও তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফে।মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তারা সঠিক সময়ে আউটডোরে অর্থাৎ সকাল নটায় হাসপাতালে বেশিরভাগ চিকিৎসাই না গিয়ে পাইভেট প্র্যাকটিসে ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ।হাসপাতালে সকাল ন’টায় আউটডোরের সময়ে চিকিৎসকেরা যদি রোগী ও হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে উপস্থিত না হয় তাহলে ওই সমস্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফে।যে সমস্ত মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রতিদিন মহকুমা হাসপাতালের আউটডোরের সময় থাকবে সেই সময় যদি কোন চিকিৎসক হাসপাতালে রোগী ও প্রয়োজনে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা বাসিন্দাদের পরিষেবা না দিয়ে পাইভেট প্র্যাকটিস করেন তাহলে ওই সমস্ত চেম্বারগুলি তদন্ত করে দেখে বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে। ভুল গ্রুপের রক্ত পরিবেশন করার ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে গোয়ালতোড় গ্রামের বছর ২১বছরের স্বামী পরিত্যক্তা আদিবাসী তরুণী মৌসুমী মাড্ডির শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার ঘটনা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।জানা গিয়েছে,যে ঘটনা নিয়ে হাসপাতালে গত রবিবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে। ছুটে আসে গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসক অভিষেক শুক্লা,থানার আইসি সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী। পরে সঙ্কটজনক অবস্থায় আইসিইউ এম্বুলেন্সে করে আদিবাসী ওই তরুণীকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।বর্তমানে তার অবস্থা সঙ্কটজনক বলেই মালদা মেডিকেল কলেজ সূত্রের খবর। হাসপাতালে দায়িত্ব পাবার পরে জেলা উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারি (২)ডক্টর ওঙ্কারনাথ মন্ডল বলেন,” আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা পালন করে রোগী ও হাসপাতালে পরিষেবা নিতে আসা মানুষজনদের স্বাস্থ্যপরিসেবা পৌঁছে দেয়া হবে।” গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডক্টর বাবুসোনা সাহা বলেন,”বেশ কিছু নির্দেশিকার চিঠি এসেছে জেলা স্বাস্থ্য ভবন থেকে।রোগীদের উন্নততর পরিষেবার দেবার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে সমস্ত নিয়ম পালন করা হবে।” জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর সুদীপ দাস বলেন,”উন্নত স্বাস্থ্যপরিসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা মহকুমা হাসপাতালের জন্য পাঠানো হয়েছে।সেইসঙ্গে বিশেষ নজর রয়েছে তার এই হাসপাতালে উপরে।তিনি চান সকলকে উন্নতমানের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।” এখন দেখার বিষয় এটাই যে, জেলার ছয়টি ব্লকের স্বাস্থ্য পরিষেবা নেওয়া মহকুমায়ী হাসপাতালে রাজ্য প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের যে স্বাস্থ্যপরিসেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা সেটা আদতে কতটা ফলশ্রুত হয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলেই।

















