ফ্রিজভর্তি বাসি মিষ্টি, প্যাকেটে নেই তারিখ-দাম! দুর্গোৎসবের মুখে বালুরঘাটে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবারের রমরমা
বালুরঘাট,১৬ সেপ্টেম্বর —-দুর্গাপুজোর ক’দিন আগে শহর জুড়ে যখন উৎসবের আমেজ, তখনই সামনে এল খাদ্যের জঘন্য চিত্র। মঙ্গলবার বালুরঘাট শহরের একাধিক দোকান ও কারখানায় ঝটিকা অভিযানে নেমে খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর, মেট্রোলজি শাখা, ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর এবং পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের হাতে উঠে এল একের পর এক চাঞ্চল্যকর অনিয়ম।
শহরের ব্রতী সংঘ এলাকার এক মিষ্টির কারখানায় ঢুকতেই চোখ কপালে ওঠে আধিকারিকদের। ফ্রিজ খুলতেই ধরা পড়ে পাহাড়প্রমাণ বাসি ও পচা সামগ্রী। দুর্গন্ধে টেকা দায়—তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলি ফেলে দেওয়া হয় নর্দমায়। সতর্কবার্তা দেওয়া হয় মালিককে। অন্যদিকে, থানা মোড়ের একটি দোকানে ধরা পড়ল মেয়াদবিহীন নিমকি, ঝুড়িভাজা—যেখানে নেই দাম, নেই প্রস্তুতকারকের নাম। কেক ও পেস্ট্রির দোকানেও একই ছবি—কোনও প্যাকেটে নেই মেয়াদের উল্লেখ। অথচ এইসব সামগ্রীই ঝটপট বিক্রি হচ্ছিল পুজোর আগের ব্যস্ত বাজারে।
অভিযান ঘিরে এদিন সকাল থেকেই শহরজুড়ে তোলপাড়। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, “এতদিন আমরা কি তবে অজান্তেই বিষ খাচ্ছিলাম?”
ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মনোজিৎ রাহা জানিয়ে দেন, “খাদ্যে অনিয়মের ঘটনায় কোনওরকম ছাড় নেই। যে দোকানদার বা কারখানা মালিক নিয়ম ভাঙবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” একইসঙ্গে তিনি শহরবাসীকে সচেতন হওয়ার বার্তাও দেন—খাবারের মোড়ক খুঁটিয়ে দেখে তবেই কিনতে হবে।
তবে ব্যবসায়ীরা দায় এড়াতে ব্যস্ত। এক মিষ্টি দোকানদারের সাফাই, “প্যাকেটে মেয়াদ-দাম লিখতে হবে জানা ছিল না। নিয়ম মেনে চলব।” আবার কেক বিক্রেতাদের ক্ষোভ, “কালিয়াগঞ্জ থেকে কেক আসে, ওরা মেয়াদ লেখে না। আমাদের হাত গুটিয়ে বসা ছাড়া উপায় নেই।”
পুজোর আগমুহূর্তে এই অভিযানে ব্যবসায়ী মহলে কাঁপুনি। শহরবাসীর কাছে প্রশ্ন একটাই—শহরের প্রতিটি প্লেটে কি তবে সত্যিই নিরাপদ খাবার পৌঁছচ্ছে?