শিক্ষক দিবসেই কেলেঙ্কারি! হরিরামপুরের মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রীদের নিয়ে ওয়াটার পার্কে অশ্লীল নাচগান। ভিডিও ভাইরাল, পলাতক মালিক। শীতল চক্রবর্তী ১০সেপ্টেম্বর। শিক্ষক দিবস মানেই গুরুজনকে শ্রদ্ধা জানানোর দিন।অথচ সেই দিনেই দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে ঘটল এক লজ্জাজনক কাণ্ড!অভিযোগ, বাগিচাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নেন্দ্রা মহিলা মাদ্রাসার হোস্টেলের কিশোরী ছাত্রীরা শিক্ষক ও স্টাফদের সঙ্গে মালদার একটি ওয়াটার পার্কে গিয়ে রাতভর অশ্লীল নাচগানে অংশ নেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই এলাকায় বয়ে যায় ক্ষোভের ঝড়। তীব্র প্রতিবাদে মঙ্গলবার উত্তাল হয়ে ওঠে মাদ্রাসার চত্বর।অভিভাবকদের ক্ষোভে থমথমে পরিবেশ তৈরি হয় এলাকায়।
জানা গেছে প্রায় তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওই সংখ্যালঘু মহিলা মাদ্রাসায় প্রায় দু’শোরও বেশি ছাত্রী হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। কিন্তু অভিভাবকদের অভিযোগ, এত বড় প্রতিষ্ঠানে একটিও মহিলা কর্মী নেই। সুযোগ নিয়েই শিক্ষক দিবসের দিনে ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয় ওয়াটার পার্কে বলে অভিযোগ। সেখানে হাফ গেঞ্জি ও প্যান্ট পরে রাতভর চলে নাচগান— সেই দৃশ্যই এখন ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিভাবকেরা। তারা বলেন, “আমাদের মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে মাদ্রাসার কর্তারা। আমরা এর কঠোর শাস্তি চাই।” ইতিমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে প্রশাসনিক সমস্ত স্তরেই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। কিন্তু তারপরেও কেন নিশ্চুপ প্রশাসন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা।
এদিকে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই গা-ঢাকা দিয়েছেন মাদ্রাসার মালিক মোস্তাক হোসেন। পুলিশ তল্লাশি শুরু করলেও এখনো তাঁর খোঁজ মেলেনি। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়ায় আরও ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। প্রশ্ন উঠছে— পুলিশের ভূমিকাই কি সন্দেহজনক? “সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে আছে কি না” তা নিয়েও সরব হয়েছেন অভিভাবকদের একাংশ।
এদিকে এই ঘটনা সামনে আসার পরেই প্রশ্ন উঠেছে মাদ্রাসার অনুমোদন নিয়ে। কীভাবে এই মাদ্রাসা অনুমোদন পেল, সেটাও যেন এখন বড় রহস্য হয়ে দাড়িয়েছে হরিরামপুরে। যদি অনিয়ম করেই প্রতিষ্ঠানটি চলে, তবে স্থানীয় প্রশাসন এতদিন নীরব কেন ছিল?
অভিভাবক আকবর আলী,ফাইসাল হোসেনরা অভিযোগ করে বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসার মালিক ও শিক্ষকরা মিলে ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিনে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানায়। অভিযুক্তদের আইন সাজা দেবে, সেই কারনেই আমরা বিক্ষোভ দেখিয়ে থানা সহ প্রশাসনিক সমস্ত স্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।
যদিও গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দ্বীপায়ন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে এলাকাবাসীর একটাই প্রশ্ন—নাবালিকা ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা চললেও কেন এখনো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনো কোন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল না? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলার দায় কে নেবে?