সাতসকালে থানায় হানা কন্যাশ্রীদের, চমকে গেল পুলিশ! ডিএসপির তৎপরতায় জমে উঠল সাইবার পাঠশালা
বালুরঘাট, ১৪ আগষ্ট ——- সকালে থানার রুটিন কাজ চলছিল স্বাভাবিক ছন্দে। হঠাৎই দরজার বাইরে ভিড় জমল— এক, দু’ নয়, প্রায় শতাধিক কন্যাশ্রী, পরনে ইউনিফর্ম, মুখভরা হাসি আর চোখে একরাশ কৌতূহল। যা দেখে মুহূর্তে থমকে যায় বালুরঘাট সাইবার ক্রাইম থানা ও মহিলা থানার পরিবেশ। অবাক পুলিশ অফিসারেরা এগিয়ে এসে প্রশ্ন করলেন, “তোমরা সবাই একসঙ্গে থানায় কেন?” উত্তর এল একসাথে— “আমরা কন্যাশ্রী, এসেছি আপনাদের কাছ থেকে শিখতে।”
এরপরই শুরু হয় এক ভিন্ন সকাল— থানা বদলে যায় পাঠশালায়। কন্যাশ্রী দিবসের বিশেষ উদ্যোগে পুলিশ ও কন্যাশ্রীর মুখোমুখি আলোচনায় উঠে আসে সাইবার দুনিয়ার অজানা-অচেনা সব ফাঁদ।
ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ ও সাইবার ক্রাইম থানার আইসি সৌরভ ঘোষ সরাসরি ছাত্রীদের সামনে বসে খুলে বললেন— কী এই সাইবার প্রতারণা, কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া, ফিশিং লিঙ্ক বা ভুয়ো প্রোফাইলের ফাঁদে মানুষ জড়িয়ে পড়ে, আর কীভাবে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা যায়।
যা শুনে প্রশ্নের ঝড় তোলে কন্যাশ্রীরা— ফেসবুকে ফেক আইডি কীভাবে ধরা যায়, অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করলে কী হয়? অনলাইনে ছবি পোস্ট করা কতটা নিরাপদ? অপরিচিত চ্যাটে কী বিপদ লুকিয়ে থাকে? যা নিয়েই পুলিশ আধিকারিকেরা একে একে ব্যাখ্যা করলেন প্রতিটি বিষয়ে, আর শিখিয়ে দিলেন জরুরি সতর্কতার মন্ত্র— “নিজের তথ্য নিজের কাছে, অচেনা লিঙ্কে না-যাওয়া, সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় আসা।”
যে আলোচনা শেষ হতেই কন্যাশ্রীদের মুখে ফুটে উঠল নতুন আত্মবিশ্বাস। কেউ বলে উঠল “এখন আর আমরা ঠকব না।” কেউ বলল, “আমরা অন্যদেরও সতর্ক করব।”
ডিএসপি বিক্রম প্রসাদ বলেন, কন্যাশ্রী দিবসে এমন আচমকা থানা পরিদর্শন আমাদের সকলকেই চমকে দিয়েছে। তবে এটাই আসল সাফল্য— ওরা নিজেরা সজাগ হচ্ছে, অন্যকেও সজাগ করছে।”
দিনের শেষে থানার দরজা পেরিয়ে ফিরল শতাধিক কন্যাশ্রী। যাদের হাতে শুধু বই-খাতা নয়, সঙ্গে রইল সাইবার সুরক্ষার অস্ত্র আর এক নতুন দায়িত্ব— নিজে সচেতন থাকা, অন্যকে সচেতন করা।