বালুরঘাট, ১২ আগষ্ট ——-বিজেপি-তৃণমূলের গোপন আঁতাতে গেরুয়া দুর্গে উড়লো সবুজ আবীর। বালুরঘাটের রাজুয়ায় বিট্রিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত সমবায়ের দখল নিল তৃণমূল। সবুজ আবীর মেখে মিছিল করে উচ্ছ্বাস তৃণমূল নেতা কর্মীদের। মঙ্গলবার কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ধর্মপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির বোর্ড গঠন সম্পন্ন হতেই প্রকাশ্যে আসে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের ‘গোপন আঁতাত’। যদিও পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে ‘কিছুই জানি না’ সুরে কথা বলেছেন তপনের বিজেপি বিধায়ক বুধরাই টুডু।
দক্ষিন দিনাজপুর জেলার তপন বিধানসভাটি একসময় তৃণমূলের খাসতালুক হিসেবে পরিচিত থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তপন বিধানসভা বিজেপির অন্যতম শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এখান থেকেই জয়ী হন বিজেপি নেতা বুধরাই টুডু। তার এমন খাসতালুকে সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলের সাথে বিজেপির বোঝাপড়া রাজনৈতিক মহলে বিস্ময় তৈরি করেছে। এর আগে দীর্ঘদিন সমবায়টি বামেদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এবারে সমঝোতার পথে হেঁটে প্রথমবার দখল নিয়েছে তৃণমূল।
জানা গেছে, রাজুয়ার ধর্মপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি নামে ওই সমবায়টির মোট আসন সংখ্যা ৯। যার মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৫, বিজেপি ও বামেরা পেয়েছে ২টি করে আসন। যে সমবায়টিতেই সামনে এসেছে তৃণমূল ও বিজেপির সমঝোতার চিত্র।বিজেপি নেতা তথা সমবায় সদস্য গোবিন্দ চন্দ্র মহন্ত সরাসরি স্বীকার করেছেন, “নির্বাচন হয়নি। সমঝোতাতেই বোর্ড গঠন। আমরা ২টি ও বামেরা ২টি আসন পেয়েছি, বাকি ৫টি গেছে তৃণমূলের হাতে।”
বাম নেতা দেবেন্দ্রনাথ দাসের অভিযোগ, তৃণমূলী সন্ত্রাসের ভয়ে তারা সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছেন। “প্রার্থী তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি, মারপিট—এসব থেকে বাঁচতেই আমরা এ পথ বেছে নিয়েছি।”
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সুবীর মন্ডল অবশ্য দাবি করেছেন, সমঝোতা হয়েছে অর্থের অপচয় রোধে। “নির্বাচন করলে প্রচুর খরচ হয়, তাই আলোচনার মাধ্যমে বোর্ড গঠনই ছিল সবার কাছে যৌক্তিক।”
যদিও পুলিশি নিরাপত্তায় শান্তিপূর্ণভাবে বোর্ড গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমবায়ের ম্যানেজার সুনীল কুমার সরকার।
তবে গ্রামীণ রাজনীতিতে এই ‘সবুজ-গেরুয়ার হাত মেলানো’ এখন রাজুয়ার চায়ের দোকান থেকে হাট-বাজার—সবখানেই যেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।