শহর বাঁচাতে গেট খুলল সেচ দফতর, ভাসল বালুরঘাটের আত্রেয়ী কলোনি! ঘরছাড়া একাধিক পরিবার
বালুরঘাট,৩১ জুলাই ——বালুরঘাট শহরকে বাঁচাতে খোলা হল স্লুইস গেট। আর তাতেই সর্বনাশ আত্রেয়ী খাঁড়ির ধারে বসবাসকারী শতাধিক মানুষের। রাতারাতি ভেঙে পড়েছে একাধিক ঘর-বাড়ি, শৌচালয়, টিউবওয়েল। ঘরছাড়া হয়ে কেউ ঠাঁই নিয়েছেন বাঁধের মাথায়, কেউ আবার স্থানীয় পার্টি অফিসে।
টানা কয়েকদিনের বর্ষণে ফুলেফেঁপে ওঠে আত্রেয়ী খাঁড়ি। শহরের রাস্তাঘাট জলের নিচে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় বুধবার রাতে খুলে দেওয়া হয় স্লুইস গেট। মুহূর্তের মধ্যে জল ঢুকে পড়ে শহরের একপ্রান্তে থাকা আত্রেয়ী কলোনিতে। জলের তোড়ে নদীর পাড় ভেঙে ভেসে যায় ঘরবাড়ি। আতঙ্কে রাত জাগেন এলাকার শতাধিক বাসিন্দা।
এলাকার এক বৃদ্ধা মেনকা ভৌমিক বলেন, “স্লুইস গেট খুলতেই চোখের সামনে পাঁচটা ঘর পড়ে গেল। কাউকে জানিয়ে কোনও লাভ নেই, কেউ আসেই না।”
গৃহবধূ সোনিয়া সাহা বললেন, “আমরা গিয়ে বলেছিলাম, জল একটু ধীরে ছাড়ুন। বলল—উপরমহলে যান! আমরা কি বুঝি কোথায় যাব?”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বর্ষা এলেই এমন ভাঙনের ঘটনা ঘটে। বহুবার প্রশাসনকে জানানো হলেও স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শংকরী সাহা নামে অপর এক মহিলা জানিয়েছেন, “বাড়ির অর্ধেকটাই খেয়েছে খাঁড়ি। টিউবওয়েল, শৌচালয় সব গেছে। এখন আমরা গৃহহীন। আশ্রয় নিয়েছি পার্টি অফিসে।”
বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, “বাসিন্দারা সেচ দপ্তরের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছেন। তবে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য সেচ দপ্তরকে জানানো হয়েছে। খাঁড়ির এক পাশে বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে।”
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে শুধুমাত্র এক প্রান্তে। বিপর্যয় ঘটেছে অন্যদিকে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও ঘরবাড়ি ভেসে যাবে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।
যদিও সেচ দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অংকুর মিশ্র বলেন, “জল না ছাড়লে শহরটাই ডুবে যেত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।”