হাসপাতাল ফাঁকা, চিকিৎসক ধর্মতলায়!

0
180

হাসপাতাল ফাঁকা, চিকিৎসক ধর্মতলায়! “অভিযোগ”ছুটি না নিয়েই তৃণমূলের সভায় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক,ক্ষোভ সাংসদেব, হরিরামপুরে ভোগান্তিতে রোগীরা,
শীতল চক্রবর্তী, বালুরঘাট, ২০ জুলাই —— রোগী ভর্তি, হাসপাতালে ভিড়, অথচ চিকিৎসক নেই! দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রবিবার সকাল থেকে এমনই ছবি দেখা গেল। চিকিৎসক থেকে প্যাথলজি বিভাগের কর্মী— সবাই গায়েব। চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। অভিযোগ, ছুটি না নিয়েই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিরুদ্ধ চৌধুরী এবং প্যাথলজি বিভাগের কর্মী এরশাদ আলী কলকাতায় হাজির হয়েছেন তৃণমূলের ২১জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চে।তাদের পাশে তৃণমূল যুব নেতা অম্বরিশ সরকারের ফেসবুক পোস্টে ছবি ছড়াতেই হইচই। হাসপাতাল চত্বরে রোগী ও আত্মীয়দের ক্ষোভ যেন উপচে পড়ছে। আবুজার গাফারী নামে এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘‘রবিবারেও হাসপাতালে এসেছিলাম।ডাক্তারবাবু নেই। একের পর এক ঘুরলাম, কাজের কাজ কিছু হল না।’’
আনসারুল সাইরা নামে আরো এক রোগীর আত্মীয়র অভিযোগ, ডাক্তারবাবু নেই। চিকিৎসা ছাড়া ফিরতে হচ্ছে। এটাই নিয়ম হয়ে গেছে।”
হরিরামপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র সুত্রের খবর, ওই ব্লকে বিএমইচ অনিরুদ্ধ চৌধুরী সহ মোট চারজন চিকিৎসক রয়েছেন। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান বিভাগের চিকিৎসক।অর্থাৎ চিকিৎসা পরিষেবা প্রতিদিনই তার হাজির থাকার কথা। বাকি আরো তিনজন চিকিৎসক সেখানে বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসা করে থাকেন। সেখানে ই হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল বিভাগের কর্মী এরশাদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ধর্মতলার একুশে জুলাই এর শহীদ দিবসের ধর্মতলা সভার জন্য তিনি হাজির হয়েছেন বলে অভিযোগ। আর যার জেরে কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিষেবা।
সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এক্স-হ্যান্ডেলে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লেখেন, “রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তলানিতে। সরকারি ডাক্তাররা যদি রাজনৈতিক সভার জন্য পরিষেবা বন্ধ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? লজ্জা!”
জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্বরিশ সরকার অবশ্য দাবি করেছেন, “ওঁরা ছুটি নিয়ে গিয়েছেন। জেলার মানুষের খোঁজ নিতেই এসেছেন।এক ঘণ্টার মধ্যে পরিষেবা দিয়ে ফিরে গিয়েছেন।এতে অন্যায় কী?”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিরুদ্ধ চৌধুরীও। তাঁর কথায়, “আমি দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়েই গিয়েছিলাম।জেলার মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি। এতে পরিষেবা ব্যাহত হয়নি।”
জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস অবশ্য জানিয়েছেন, “চিকিৎসক ছুটি নিয়েছেন। কোথায় গেছেন তা জানা নেই।বিষয়টি দেখা হবে।”
শাসক দলের সভায় যোগ দিতে গিয়ে সরকারি হাসপাতাল বন্ধ তৃণমূলের ‘জনতার সরকার’-এর মুখে আবারও কালির ছিটে, বলছেন বিরোধীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here