সুপার স্পেশালিটিতেই “সুপার” গাফিলতি!

0
20

সুপার স্পেশালিটিতেই “সুপার” গাফিলতি! প্রসব যন্ত্রণা নিয়েও ফিরিয়ে দিল হাসপাতাল। বাড়িতেই সন্তান প্রসব, মৃত নবজাতক

বালুরঘাট, ২৫ জুন ——- প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তির পরেও মহিলাকে ফেরালো হাসপাতাল! বাড়িতেই সন্তান প্রসব, হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু শিশুর। বুধবার এই মর্মান্তিক ঘটনাকে ঘিরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। মৃত শিশুর পরিবারের লোকেদের ক্ষোভের মুখে পড়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসকও। তাদের দাবি ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

দক্ষিন দিনাজপুর জেলার তপনের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশমুলাই গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক মানব বর্মন। সোমবার তার স্ত্রী রত্না বর্মন কে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি করান বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক রাজু মহাজন জানান, সন্তান প্রসব হতে এখনও সময় আছে। এরপর মঙ্গলবারই রত্নাকে ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এমনকি দশ দিন পরে ফের আসার পরামর্শও দেন চিকিৎসক। এরপর বুধবার সকালে নিজের বাড়িতেই সন্তান প্রসব করে ফেলেন ওই মহিলা। প্রথমে শিশুটি স্বাভাবিক থাকলেও পরবর্তীতে বেশকিছু অস্বাভাবিক বিষয় লক্ষ্য করতেই তড়িঘড়ি পরিবারের লোকেরা ওই শিশু ও তার মাকে নিয়ে ছুটে আসেন বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। যেখানেই চিকিৎসক ওই শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে। যদিও ওই শিশুটির মা রত্না বর্মন বর্তমানে বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে ওই প্রসূতির পরিবার। তাদের অভিযোগ, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরদিন চিকিৎসক তাকে ছুটি না দিলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতো না।

মৃত শিশুর বাবা মানব বর্মন অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতাল থেকে তার স্ত্রীকে ছুটি না দিলে শিশুটির মৃত্যু হত না। পুরো ঘটনার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজু মহাজন দায়ী। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

রত্নার দাদা মিঠু বর্মন বলেন, পুরো ঘটনার জন্য দায়ী বালুরঘাট হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেয় তারা। আর যে কারনে বাড়িতেই সন্তান প্রসব হয়ে যায় তার বোনের। হাসপাতালে সন্তান প্রসব হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। বিষয়টি নিয়ে তারা লিখিত অভিযোগ জানাবেন এবং এধরণের ঘটনা যেন আর কারো সাথে না ঘটে তারও দাবি জানান।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—সেই ব্যবস্থা কি ফিরিয়ে দেবে একটি নতুন প্রাণকে? হাসপাতালের করিডরে যে শিশুটি জন্ম নিতে পারত নিরাপদে, তাকে ফিরিয়ে দিল কার গাফিলতি?

ঘটনাটি ফের দেখিয়ে দিল, ‘সুপার স্পেশালিটি’ শব্দটা যতটা জাঁকজমকপূর্ণ, বাস্তবে তার ছায়া ততটাই ফাঁপা। যেখানে ব্যথা নিয়ে গেলে ফিরে আসে মৃত্যুর সংবাদ। প্রশ্ন শুধু এক রত্না নয়—এই ব্যবস্থার প্রতি আমাদের বিশ্বাসটাই কি আজ প্রশ্নের মুখে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here