বোনের প্রেমিকের হাতে খুন হল আদিবাসী ঠিকাদার সরবরাহকারী কাজ করা যুবকের

0
138

বোনের প্রেমিকের হাতে খুন হল আদিবাসী ঠিকাদার সরবরাহকারী কাজ করা যুবকের,খুনের অভিযোগ দায়ের মৃতের স্ত্রীর,তদন্তে পুলিশ

শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৬মে দক্ষিণ দিনাজপুর।রাতের অন্ধকারে গোপনে বোনের প্রেমিকের হাতে খুন হল বিদেশে শ্রমিক সরবরাহকারী এক আদিবাসী ঠিকাদার যুবককে বলে অভিযোগ উঠেছে।ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানার পুন্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েত মিশনপাড়া এলাকায়।খুন হওয়া যুবকের স্ত্রীর অভিযোগ,”পুরনো আক্রোশবশত স্বামীকে খুন করেছে অভিযুক্ত বলে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।দোষীর ফাঁসির দাবি মৃতের পরিবারের।পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রণয় ঘটিত কারণের ঘটনা নিয়ে আদিবাসী ওই যুবককে ঘরের মধ্যে ধরে খুন করেছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সোমবার রাতেই ওই যুবককে তার বাড়ির পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।পরে চিকিৎসকেরা তাকে সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করে। পুলিশ জানিয়েছে ,বোনের প্রেমিকের হাতে খুন হওয়া আদিবাসী শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদারের নাম জিমেন টুডু বয়স(২৪)।তার বাড়ি হরিরামপুর থানার পুন্ডরি গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশনমোড় এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে,খুনে অভিযুক্ত আদিবাসী ওই যুবকের নাম হেমন্ত মুর্মু তার বাড়ি মালদা জেলার হব্বিপুর থানার নিয়মতপুর বুলবুলচন্ডী এলাকায়। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে,মালদা জেলার নিয়ামতপুর বুলচন্ডী এলাকার বাসিন্দা হেমন্ত সরেন তার প্রেমিকা স্বর্ণলতা সরেনের পুন্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশনমোড়ে একটি শ্রাদ্ধ বাড়ির অনুষ্ঠানে এসেছিল।সেখান থেকে সে রাতের অন্ধকারে স্বর্ণলতা সরেনের ঘরের মধ্যে খাটের নিচে লুকিয়ে ছিল।এদিকে স্বর্ণলতা সরেনের ভাই জিমেন রাত্রি তার বাড়িতে একটি ঘরে শুয়েছিল। অপর দিকে স্বর্ণলতা সরেন রাতের খাবার শেষে নিজের ঘরে শুতে যায়।ঘরের মধ্যে আলো জ্বালাতেই খাটের নিচে দেখতে পায় কে যেন লুকিয়ে রয়েছে সেখানে।তখন স্বর্ণলতা চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করলে পাশের ঘর থেকে তার ভাই জিমেন ছুটে আসে।তখন জিমেন দেখতে পায় খাটের নিচে হেমন্ত লুকিয়ে রয়েছে।এমন সময় ঘরের খাটের নিচ থেকে বের হয়ে জিমেনের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে হেমন্ত । অভিযোগ,”হঠাৎ করেই স্বর্ণলতা সরেনের উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে হেমন্ত।তখন জিমেন তার দিদিকে বাঁচাতে গেলে হেমন্তর হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র জিমেনের উপর চালিয়ে দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।ঘটনায় জিমেন কোন মতে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ির পাশে একটি দোকানের সামনের রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মনাদ করতে থাকে।পরে তাকে গ্রামবাসীরা প্রথমে রশিদপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর,অভিযুক্ত যুবক বিদেশে শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার হিসেবে কাজ করত।সেখানেই স্বর্ণলতা হেমরম সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয় বলে জানা গেছে।এমনকি স্বর্ণলতা সরেনকে হেমন্ত মুর্মু জানায় সে অবিবাহিত একজন যুবক। মৃতের পরিবার সূত্রের খবর, হেমন্ত কাছ থেকে স্বর্ণলতা সরেন বেশ কয়েক লক্ষ টাকাও নিয়েছিল।স্বর্ণলতা সরেন বাড়িতে ফিরে এসে জানতে পারে হেমন্ত মুর্মু বিবাহিত ও তার ছেলে রয়েছে।এরপরেই স্বর্ণলতা হেমন্তর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বলে খবর। বহুদিন পরে স্বর্ণলতার সঙ্গে গোপনে দেখা করতে তার বাড়িতে গিয়েছিল হেমন্ত বলে খবর। স্বর্ণলতা সরেন জানিয়েছেন,”খুন হওয়া আদিবাসী যুবক আমার পুরনো পরিচিত ছিল।যেহেতু ওর ছেলে ও স্ত্রী রয়েছে পরে আমি তা জানার সঙ্গে সঙ্গেই তার সাথে সমস্ত সম্পর্ক রাখবো না বলেই আক্রোশবশত এমন ঘটনা ঘটিয়েছে সে।খুনির কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।” এবিষয়ে মৃতের স্ত্রী বিউটি মুর্মু জানিয়েছেন,”পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে খুন করেছে অভিযুক্ত।দোষীর ফাঁসি শাস্তির দাবি জানাই।” মৃতের বাবা জীতেন টুডু জানিয়েছেন”যেভাবে ছেলেকে খুন করেছে অভিযুক্ত তার কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।” গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দ্বীপায়ন ভট্টাচার্য বলেন,”একটি খুনের ঘটনা ঘটেছে,পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।” শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে অভিযুক্ত যুবক ঘটনার পর থেকেই বর্তমান সময় পর্যন্ত পলাতক রয়েছে,তার খোঁজে চিরুনি তল্লাশিতে নেমেছে হরিরামপুর থানার পুলিশ। এমন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে হরিরামপুরসহ জেলাজুড়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here