গঙ্গারামপুর মহকুমায় গত ১০দিনে ৪ সংখ্যালঘু কিশোরী সহ ৭জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শোরগোল,কিশোরীদের গোপনে দেওয়া হচ্ছে বিয়েও “অভিযোগ”,তদন্তে পুলিশ
শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৩মে দক্ষিণ দিনাজপুর।গত ১০দিনে চার সংখ্যালঘু কিশোরী সহ সাতযুবক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শোরগোল।ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমার, গঙ্গারামপুর,হরিরামপুর, বুনিয়াদপুর সহ চারটি ব্লকের মহকুমার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে।অভিযোগ উঠেছে,নিখোঁজ হওয়া সংখ্যালঘু কিশোরীদের সরকারি নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে গোপনে সংখ্যালঘু যুবকদের পরিবার আটকে রেখে তাদের ছেলের সঙ্গে বিয়ে পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে।ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই জেলাজুড়ে শোরগোল পড়েছে।পুলিশ অবশ্য পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গঙ্গারামপুর থানা সূত্রের খবর, গত ২৫শে এপ্রিল দুপুরে গঙ্গারামপুর ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকার দুমুঠা দহপাড়া এলাকা থেকে ৯বছরের এক কিশোরী (বান্টি খাতুন)বাবার নাম রবিউল “যাদের আসল নাম নয়” নিখোঁজ হয়।একই দিনে দু’মুঠা দহপাড়া এলাকা থেকে কিশোরী রিম্পা খাতুন,(১২)বছর বাবার নাম মোতাহার(যাদের আসল নাম নয়),তার কিশোরী মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সমস্ত বিবরণ দিয়ে।গত মে মাসের শেষের দিকে গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়ী এলাকা থেকে এক সংখ্যালঘু কিশোরী রিতু খাতুন,বয়স১৭+,বাবার নাম বলাই(যাদের আসল নাম নয়), সেও নিখোঁজ হয়ে যায়। ওই কিশোরীর বাবার অভিযোগ,” পরে তিনি জানতে পারেন তার নাবালিকা মেয়েকে গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়ি মালঞ্চা এলাকার অভিযুক্ত মুস্তাফি সরকার,মকবুল হোসেন,মেরিনা বিবিরা মিলে তাদের পরিবারের ছেলের সঙ্গে আমার নাবালিকা মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে আটক করে রেখেছে তারা। আমার নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে তাদের ছেলের বিয়ে দেবার পরিকল্পনা করছে তারা বলে অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনা জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন গত ২৩এপ্রিল।দোষীদের কঠোর সাজা হোক সেই দাবি জানান তিনি।” এছাড়াও গঙ্গারামপুর শহরের এক নাবালিকা সংখ্যালঘু কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন তাদের পরিবারের লোকজন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।জানা গিয়েছে,গত ১৯এপ্রিল গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৪নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হালদারপাড়ার বাসিন্দা রাধাগোবিন্দ ঘোষ,(৩৩)বছরের এক যুবক নিখোঁজ হয়।নিখোঁজের পরে ওই যুবকের পরিবারের তরফে গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ২১এপিল তারিখে।পুলিশি সূত্রে খবর,গত ২২এপ্রিল বংশীহারী থানা এলাকা থেকে এক সংখ্যালঘু নাবালিকা কিশোরী নিখোঁজ হয়েছিল।ওই নাবালিকার পরিবার পুরো ঘটনা জানিয়ে থানায় নিখোঁজের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বলে নিখোঁজের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।পুলিশি সূত্রেই আরো জানা গিয়েছে যে,গত ২৮শে এপ্রিল নুরুল ইসলাম বয়স(২৬)নামে হরিরামপুর থানার গোকর্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের জাঠিগ্রামের বাসিন্দা হরিরামপুর বাজারে এসে নিখোঁজ হয়।ওই যুবকের পরিবারের তরফেও হরিরামপুর থানায় নিখোঁজের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া নাবালিকাদের পরিবার ও যুবকদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন,”প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে তাদের পরিবারের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সদস্যদের উদ্ধার করুক সেই দাবি জানাই।” জেলা প্রশাসনের শিশু ও কিশোরী নিরাপত্তা দপ্তরের জেলা আধিকারিক জানিয়েছেন,” নাবালিকা শিশু ও কিশোরীদের উদ্ধার করা ও তাদের নিরাপত্তা দেবার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।খুব তাড়াতাড়ি নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে পুলিশ প্রশাসনে সহযোগিতায়।” গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দ্বীপায়ন ভট্টাচার্য জানিয়েছে,”লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ তদন্তে নেমেছে।পুরো বিষয়গুলি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, এখনো পর্যন্ত যারা নিখোঁজ হয়েছে তাদের মধ্যে প্রশাসনের তরফে একজনকে উদ্ধার করতে পারেনি।যে ঘটনা নিয়ে হইচই পরেছে গঙ্গারামপুর মহকুমা সহ জেলাজুড়ে।