নতুন নেতৃত্ব, পুরনো দ্বন্দ্ব! দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদে শঙ্কর-শিপ্রার সংবর্ধনায় মৃণাল-অম্বরিশের অনুপস্থিতি ঘিরে গুঞ্জন
বালুরঘাট, ২৮ এপ্রিল ——নবনিযুক্ত মেন্টর শঙ্কর সরকার ও কো-মেন্টর শিপ্রা নিয়োগীর সংবর্ধনায় সোমবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ চত্বর যেন প্রাণের স্রোতে ভেসেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর আস্থা নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন দু’জনই। মঞ্চে হাসি, করতালি আর প্রত্যয়ের দীপ্তি। কিন্তু এই রঙিন আয়োজনে মিশে ছিল অদৃশ্য এক চাপা অস্বস্তির সুরও।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই দায়িত্ব হস্তান্তর করেন এডিএম নবীন কুমার চন্দ্রা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি চিন্তামণি বিহা সহ একাধিক কর্মাধ্যক্ষ। শুভেচ্ছার ফুল, উত্তরীয়, করতালির মধ্যে শঙ্করবাবু জানিয়ে দেন, “দায়িত্বের মর্যাদা রাখতেই আমাদের শপথ। রাজ্যের নেতৃত্বের ভরসা কাজে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য।” শিপ্রা নিয়োগীও বললেন, “প্রশাসনিক গতিকে আরও মসৃণ করে জেলার মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আসল চ্যালেঞ্জ।”
তবে সংবর্ধনার আবহেই চোখ টেনেছে কিছু উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি। সহকারী সভাধিপতি অম্বরিশ সরকার, সদস্য মৃণাল সরকার-সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নেতার গরহাজিরি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়েছে। বিশেষ করে মৃণাল সরকারের অনুপস্থিতি ঘিরে প্রশ্ন আরও জোরালো। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, শঙ্কর সরকার ও শিপ্রা নিয়োগীর নাম ঘোষণা হতেই অস্বস্তিতে পড়েছিলেন তিনি। দলের অন্দরে চুপিসারে নিজের নাম মেন্টর পদে চালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলেও অনেকে অভিযোগ তুলেছেন। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলের ব্যাখ্যা— “ব্যক্তিগত ব্যস্ততার” কারণেই অনুপস্থিতি।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর মেন্টর-কমেন্টর নিয়োগের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক কাজের দ্রুত নিষ্পত্তি এবং তৃণমূল স্তরের তদারকি মজবুত করা। তবে রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন— গরহাজিরি কি নিছকই ব্যস্ততা, না কি তা অন্দরের দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত?
সব মিলিয়ে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের নতুন পথচলার সূচনা হল সংবর্ধনার করতালি আর চাপা অস্বস্তির ছায়া দুটোই নিয়ে। সামনে সময় বলবে, নতুন নেতৃত্বের পা কতটা মসৃণ পথে পড়ে।