কোটি টাকার পথশ্রীতে “ফাটল” দুর্নীতি!

0
104

কোটি টাকার পথশ্রীতে “ফাটল” দুর্নীতি! হরিরামপুরের গোকর্ণে গ্রামবাসীদের তীব্র প্রতিবাদে থমকে গেল কাজ, চাপের মুখে প্রশাসন

বালুরঘাট, ২৫ এপ্রিল ——পথশ্রী নামের ‘উন্নয়নযজ্ঞ’-এ কোটি টাকা ঢালা হল। আর কয়েকদিনেই তার গায়ে ধরা পড়ল ফাটল! হরিরামপুরের গোকর্ণে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ধসে পড়ল সিমেন্টের মুখোশ। রাস্তা নয়, যেন দুর্নীতির ছক আঁকা এক চোরা পথ! ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা হাত ধরলেন প্রতিবাদের। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী, স্বচ্ছতার অভাব—সব মিলিয়ে থমকে গেল কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ।

জানা গেছে, গোকর্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোড়াহার বাঁধ থেকে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তাকে পাকা করার দায়িত্ব পেয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (WBSRDA)। বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। প্রকল্পের নাম ‘পথশ্রী’, অথচ সিডিউলের সাইনবোর্ড নেই, নেই কাজের মান যাচাইয়ের কোনও উপায়। রাস্তার গায়ে হাত রাখলেই উঠে যাচ্ছে সিমেন্ট, উধাও বালি, উঁকি দিচ্ছে কাঁচা পাথর।

এলাকার বাসিন্দা সাদিকুল আলম ও সাদিকুল ইসলামরা বলেন, “চোখের সামনে এই দুর্নীতি আর মেনে নেওয়া যাবে না। সিডিউল ছাড়াই যা ইচ্ছে তাই করে চলেছে ঠিকাদার। রাস্তা তৈরির কয়েক দিনের মধ্যেই এমন দশা? আমরা তো অন্ধ নই!” তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে সেকেন্দর আলীর হুঁশিয়ারি, “সত্যিকারের রাস্তা চাই—প্রতারণা নয়। স্বচ্ছতা না এলে এক ইঞ্চিও কাজ হতে দেব না।”

ইতিমধ্যেই টানা পাঁচদিন ধরে বন্ধ রয়েছে নির্মাণ। এলাকার মানুষ একযোগে রুখে দাঁড়িয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অভিযোগের মুখে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে সন্তু মাহাতো অবশ্য দাবি করছেন, “সব কিছু নিয়ম মেনেই হচ্ছে। অভিযোগ ভিত্তিহীন।”তবে মানুষ মানছে না সেই ব্যাখ্যা।

হরিরামপুরের বিডিও অত্রি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গোকর্ণ এখন শুধু একটি গ্রাম নয়, প্রতিরোধের প্রতীক। রাস্তার ফাটলে ধরা পড়েছে পুরো ব্যবস্থার ফাঁক। প্রশাসনের চোখে চোখ রেখে মানুষ বলছে—এইবার প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here