হিলিতে ইস্কনের বাংলাদেশী পুরোহিতকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে। ক্ষোভ প্রকাশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৮ মার্চ ——- ইস্কনের বাংলাদেশী পুরোহিতকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ হিলিতে। বিএসএফের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের নোয়াখালির বাসিন্দার। খুনের মামলা রজু পুলিশের। ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্য সভা থেকে ক্ষোভ প্রকাশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। তুমুল হইচই দক্ষিণ দিনাজপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ২ মার্চ হিলির পাঞ্জুল গ্রাম পঞ্চায়েতের চকগোপাল বিওপিতে পাচারের অভিযোগে এক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে পাকড়াও করে ১৩৭ নম্বর বিএসএফ ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা। এরপর তাকে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হলে কিছুক্ষণ পরেই শারিরীক অসুস্থতা বোধ করে ওই ব্যক্তি। এরপরেই তড়িঘড়ি তাকে হিলি গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। যা নিয়ে প্রথম থেকেই বিএসএফ দাবি করে, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে চোরা কারবার করবার অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। তবে মৃত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত ও ধুলোর চিহ্ন দেখে সন্দেহ প্রকাশ পায় অনেকেরই। যার পরিপ্রেক্ষিতে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের ময়নাতদন্ত করা হয় ওই মৃতদেহটির। যদিও এই ঘটনা নিয়ে প্রথম থেকেই সংবাদমাধ্যমের সামনে পুলিশ বা বিএসএফ কেউই মুখ খুলতে চাননি। শুধু তাই নয়, মৃতদেহের নাম পরিচয়ও সেভাবে কেউই প্রকাশ্যে আনেনি পুলিশ বা বিএসএফ কেউই। এদিকে এই ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে চাউর হতেই খবর পৌঁছে যায় বাংলাদেশের নোয়াখালিতে। ঘটনা জানতে পেরেই সেখান থেকে ছুটে এসে হিলি থানায় বিএসএফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃত মৃত্যুঞ্জয় কুরীর ভাই সঞ্জয় কুরী। তার অভিযোগ, দাদা মৃত্যুঞ্জয় কুরী নোয়াখালির একটি ইস্কন মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। নবদ্বীপের ইস্কন মন্দির দেখার ইচ্ছে নিয়েই দালাল মারফত ভারতে ঢুকেছিল সে। যেখানেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যায়। এরপর তাদের বেধড়ক মারধরের জেরেই প্রান হারিয়েছে তার দাদা এমনটাও অভিযোগ তুলেছেন মৃত ওই বাংলাদেশী ব্যক্তির ভাই সঞ্জয় কুরী। আর যে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই চকগোপাল বিওপির কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রজু করে হিলি থানার পুলিশ। যে ঘটনা জানতেই প্রকাশ্য সভা থেকে বিএসএফের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা একটা খারাপ উদাহরণ। ইস্কনের শিক্ষিত বাংলাদেশের পুরোহিতকে বিএসএফ অত্যাচার করে মেরে ফেলেছে। বাংলাদেশ থেকে সেই অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে। আমাদের কেউ অন্যায় না করলেও তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অত্যাচার হচ্ছে। আর এখানে বিএসএফ অত্যাচার করে যখন কাউকে মেরে ফেলছে তখন তাদের বিরুদ্ধে কেন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি। একইসাথে তিনি আরো বলেছেন, কেউ যদি অন্যায় করে তার জন্য দেশে আইন রয়েছে। কিন্তু কাউকে পিটিয়ে মেরে ফেলার এক্তিয়ার কারো নেই।