খাবার খেতে গিয়ে অন্যমনস্কতা! বালুরঘাটের ছিন্নমস্তা এলাকায় শ্বাসনালিতে খাবার আটকে মৃত্যু হল ষাটোর্ধ বৃদ্ধর
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৩ মার্চ:—– গলায় খাবার আটকে এক বৃদ্ধর মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য। বালুরঘাট পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের ছিন্নমস্তা কলোনি এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই বৃদ্ধের নাম নিমাই দাস। শনিবার রাতে প্রতিবেশীর অনুষ্ঠান বাড়িতে আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে খেতে বসেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, শহরের ছিন্নমস্তা কলোনী এলাকার বাসিন্দা মৃত নিমাই দাস ওইদিন রাতে প্রতিবেশী কাজল সরকারের অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানেই নিমন্ত্রণ খাবার সময় হঠাৎই তার গলায় খাবার আটকে যায়। বিষয়টি নজরে আসে উপস্থিত সকলের। তৎক্ষণাৎ তার ছেলে বুকে পিঠে চাপড়ে দিতে থাকেন। সাধারণত যা সকলেই করে থাকেন। প্রথম অবস্থায় বিষম খাওয়া মনে হলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বেগতিক হতে থাকে। মাত্র ৫০০ মিটার দূরে রয়েছে জেলা হাসপাতাল। সেখানেই তাকে নিয়ে যান আত্মীয়রা। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। অবশেষে রবিবার দুপুরে তার মৃতদেহ পুলিশ মর্গে পাঠিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। যাকে ঘিরেই কার্যত শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
খাবার খাওয়ার সময় অন্যমনস্কতা যে বিরাট আকার নিতে পারে তারই প্রমাণ পেল বালুরঘাট। খাওয়ার সময় মনোযোগী হওয়া ও কথা না বলার নিদান বহু পুরোনো যুগের। খাবার গিলতে গিয়ে বিষম খাওয়া খুবই সাধারণ বিষয়। খাদ্য বস্তু গলা দিয়ে শ্বাসনালীতে আটকে গেলেই বিষম লাগে, তা সকলেরই জানা। কিন্তু এটি যেকোনো সময় প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। সদা ব্যস্ত যুগে নিজেদের অসতর্কতায় গলায় খাবার আটকে গিয়ে দম বন্ধ হয়ে পড়ছে অনেকেরই। যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘চোকিং’। সব থেকে বেশি গলায় আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে শিশু ও বয়স্কদের। ঠিক এমনই ঘটনায় জীবন হারালেন বালুরঘাটের ষাটোর্ধ ওই বৃদ্ধ।
মৃত ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে শ্রীদাম দাস বলেন, ‘নিমন্ত্রণ বাড়িতে গিয়ে বাবা স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। কিন্তু ভাত খেতে খেতে হঠাৎই তার গলায় তা লেগে যায়। তার সমস্যা হচ্ছে দেখে বুকে পিঠে স্বভাব সিদ্ধ নিয়মে চাপড় দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক করার চেষ্টা করতে থাকি। কিন্তু তবু পরিস্থিতি ঠিক না হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে।’