জায়গা মালিকের দাদাগিরি! কুমারগঞ্জে তিন দিন ধরে তালাবন্ধ অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার

0
415

জায়গা মালিকের দাদাগিরি! কুমারগঞ্জে তিন দিন ধরে তালাবন্ধ অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার। অভুক্ত ৫২ জন খুদে পড়ুয়া

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৩ ডিসেম্বর ———- জায়গা মালিকের দাদাগিরিতে তিনদিন ধরে তালাবন্ধ অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার। অভুক্ত ৫২ জন শিশু ও প্রসূতি মা, অসহায় সেন্টারের দিদিমনি ও সহায়িকা। প্রতিবাদে বিক্ষোভ খুদে শিশুর পরিবারের লোকেদের। বুধবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিশ্বনাথপুর এলাকায়। অবিলম্বে সেন্টারের তালা খোলার দাবি শিশুর মায়েদের। কোনভাবেই বন্ধ রাখা যাবে না আইসিডিএস সেন্টার, কড়া নির্দেশ জেলাশাসকের।

কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ১৮৯ নম্বর বিশ্বনাথপুর সাব সেন্টারটি। যেখানে ৪৮ জন শিশু ও চারজন প্রসূতি মায়ের দেখভালের দায়ীত্বে রয়েছেন একজন দিদিমণি ও একজন সহায়িকা। অভিযোগ সেই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি একপ্রকার দাদাগিরি দেখিয়েই তালাবন্ধ করে রেখেছে জায়গার মালিক সঞ্জিত পাহান ও তার পরিবারের লোকেরা। যদিও তাদের দাবি, বেশ কয়েক বছর আগে সেন্টারটি নির্মাণ করবার সময় বিনামূল্যে সরকারের হাতে তিন শতক জায়গা তুলে দিয়েছিলেন। বিনিময়ে তাদের পরিবারের একজনকে সহায়িকার চাকরির দাবি রেখেছিলেন তারা। যার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু এব্যাপারে কোন লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে। এদিকে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে ঢাল করে মাঝে মধ্যেই নিজেদের দাবি আদায় নিয়ে ওই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি তালাবন্ধ করে রাখেন জায়গার মালিক বলে অভিযোগ। আর যার জেরেই চরম বিপাকে পড়েন ওই সেন্টারের প্রায় ৫২ জন খুদে পড়ুয়া। সোমবার সকালে ফের একবার ওই জায়গার মালিক নিজেদের দাবি আদায় নিয়ে ওই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিতেই বিপাকে পড়েছেন ওই সেন্টারের খুদে পড়ুয়ারা। একইভাবে বিপাকে পড়েছেন সেন্টারের দিদিমণি ও সহায়িকাও। এদিকে টানা তিনদিন ধরে এমনভাবে সেন্টার তালাবন্ধ থাকলেও প্রশাসনের সেভাবে কোন হেলদোল না থাকায় এদিন সকাল থেকে শিশুদের কোলে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অভিভাবকেরা। যা নিয়ে কড়া বার্তা শুনিয়েছেন জেলাশাসকও।

অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের দিদিমণি শিপ্রা পাল ও সহায়িকা নমিতা বর্মন বলেন, সেন্টারের জায়গার মালিকের দাবি পুরন না হওয়ায় তালা মেরে রেখে দিয়েছে। তারা প্রতিদিন এসে ঘুরে যাচ্ছেন, কিন্তু শিশুদের খাবার দিতে পারছেন না। বিষয়টি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছেন কিন্তু এখনো কোন সমাধান হয়নি।

বিক্ষোভকারী মহিলা সুমিত্রা পাহান বলেন, জায়গার মালিক তালা মেরে দেওয়ায় তাদের শিশুদের খাবার জুটছে না। টানা তিনদিন ধরে এমন ঘটনা চললেও কারো কোন হেলদোল নেই।

এলাকার বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য মালনি পাহান বলেন, জায়গার মালিক কে আশ্বাস দেয়া হলেও তার দাবি মেটানো হয়নি। যে কারণেই এমন তালা বন্দী হয়ে রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি। বিষয়টি বিডিও কে না জানানো হলেও পঞ্চায়েত প্রধান কে জানিয়েছেন তিনি।

জায়গার মালিক সঞ্জিত পাহান বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি নির্মাণ করার জন্য তারা তিনশতক জায়গা দিয়েছেন। যা নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পূরণ না হওয়ায় তালা মেরে দিয়েছেন।

দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানিয়েছেন, কোনভাবেই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার বন্ধ করা যাবে না। এ ব্যাপারে যাবতীয় পদক্ষেপ নেবার জন্য সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কে জানানো হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here