শীতল চক্রবর্তী,গঙ্গারামপুর,১৭ই জুলাই,দক্ষিণ দিনাজপুর:-শহর এলাকার মধ্যে ঘনবসতি এলাকায় মোবাইলের টাওয়ার বসতে বাধা দিয়ে আন্দোলনে নামলো এলাকার ক্ষুদ্র গ্রামবাসীরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের কাঁদিঘাট এলাকায়।এলাকাবাসীদের অভিযোগ,শহরের মধ্যে ঘনবসতি এলাকায় টাওয়ার বসলে এলাকার বাসিন্দাদের বিপদের আশঙ্কা থাকছে,তাই কোনমতেই তারা সেখানে টাওয়ার বসাতে দেবেন না। এলাকার আশপাশের গ্রামবাসীরা এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন পৌরসভা থেকে শুরু করে বি এল এল আর দপ্তর ,থানার আইসি সহ বিভিন্ন জায়গায়।বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকার তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও। পৌরসভা জানিয়েছে, বাসিন্দারা বাধা দিলে মোবাইলের টাওয়ার না বসে অবশ্যই সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
গঙ্গারামপুর পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের কাদিঘাট এলাকাটি শহরের ঘনবসতি এলাকা বলেই পরিচিত। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ,ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেবতী রঞ্জন রায় জেএল নম্বর ৮২ , খতিয়ান নম্বর ২০৫৭, দাগ নম্বর ৩১৮তে শহরের ঘনবসতি এলাকার মধ্যে সেখানে উক্ত জমির দাগ নম্বরে টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন। এলাকাবাসীদের আরো অভিযোগ,পৌরসভার ঘনবসতি এলাকায় টাওয়ার বসলে তাদের বিভিন্ন ধরনের বিপদ হতে পারে। এমনকি ওই এলাকায় পরবর্তীতে তারা কোন ভালো কাজও করতে পারবেন না বলে তারা অভিযোগ করেন। তাই রেবতী রঞ্জন রায়ের যে জমিতে তারা টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন সোমবার সকালে সেই জায়গায় কয়েকশো গ্রামবাসী সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।সেই ঘটনা নেতৃত্ব ছিলেন গ্রাসরুট সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের গঙ্গারামপুর টাউনের সহ-সভাপতি সুরজিৎ সূত্রধর ওরফে বাবু,সহ ওয়ার্ডের কয়েকশো বাসিন্দারা।
সূত্রে জানা গেছে,শহর এলাকার ঘনবসতির মধ্যে যদি টাওয়ার বসানো হয় তাহলে ঝড় বৃষ্টিতে আশপাশের বসতিদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পরবর্তীতে ওই এলাকার আশপাশের জমির ফসলের প্রতি ক্ষতি হয়।বিপদের আশঙ্কা থাকে প্রচুর পরিমাণে।এদিন যেখানে রেবতী রঞ্জন রায় টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সে কাঁদিঘাটে এলাকায় বাসিন্দারা গিয়ে ব্যাপক পরিমাণে বিক্ষোভ দেখিয়ে টাওয়ার বসানোর প্রতিবাদ করে।
আন্দোলনরত কাদিঘাটে এলাকার গ্রামবাসী উজ্জ্বল বসাক,রত্না সূত্রধর,স্বপ্না বর্মনেরা অভিযোগ করে বলেন, পৌর এলাকার শহরের মধ্যে যদি এমন টাওয়ার বসে তাহলে আমাদের বহু অংশে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে যে কোন সময়। তাই পৌরসভা থেকে শুরু করে গঙ্গারামপুর থানায় ও বি এল এল আর ও দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে সেখানে টাওয়ার বসানোর প্রতিবাদ করা হলো। সোমবার যেখানে টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেবতী বাবু সেখানে আমরা বহু গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখিয়েছি।
গ্রাসরুট সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা গঙ্গারামপুর টাউন যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সুরজিৎ সূত্রধর ওরফে বাবু জানিয়েছেন, আমরা সবসময় মানুষজনের জন্য কাজ করে থাকি। তাই যেখানে মানুষজনদের অসুবিধা হয় সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে সামিল হয়েছি আমি নিজেও। বিষয়টি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সকলকে জানাবো।
এবিষয়ে গঙ্গারামপুর পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর মানিক সূত্রধর জানিয়েছেন,আমরা মানুষজনদের পাশে থেকে সব সময় কাজ করি।তাই মানুষজন যখন বিপদে পড়ছে সেখানে যেন টাওয়ার না হয় বাসিন্দাদের পাশে থেকে আমি অবশ্যই চেষ্টা করব।
গঙ্গারামপুর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মিডিয়া কনভেনার জয়ন্ত কুমার দাস জানিয়েছেন, বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগ করেছেন ও বিষয়টি নিয়ে তারা আন্দোলন করছেন। তাই বাসিন্দাদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
এখন দেখার এটাই বাসিন্দাদের এই আন্দোলনের ফলে পৌরসভা যদি টাওয়ার বসানোর নো অবজেশন সার্টিফিকেট না দেয় তাহলে অবশ্যই সেখানে টাওয়ার বসবে না এবং বাসিন্দার পদের মধ্যে পড়বে না। বিষয়টি এখন কোন দিকে মন নাই সে বিষয়ে তাকিয়ে রয়েছে শহর এলাকার বাসিন্দারা।