গত মার্চ মাসে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল। যাওয়ার সময় জানিয়ে গিয়েছিল ফের আগস্ট মাসে আসবে। তার আগেই বাড়িতে ফিরল। কিন্তু নিথর দেহে, কফিনবন্দি হয়ে।

0
534

জলপাইগুড়ি- গত মার্চ মাসে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল। যাওয়ার সময় জানিয়ে গিয়েছিল ফের আগস্ট  মাসে আসবে। তার আগেই বাড়িতে ফিরল। কিন্তু নিথর দেহে, কফিনবন্দি হয়ে।চোখের জলে  শহিদ শঙ্কর ছেত্রীকে বিদায় জানালো জলপাইগুড়ি তথা গোটা ডুয়ার্সবাসী।প্রসঙ্গত, মনিপুরে ধস নেমে অন্যান্য সেনা জওয়ানের সঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল নাগরাকাটার শংকর ছেত্রীর। আজ তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়  নাগরাকাটার মংরুপাড়ার বাড়িতে । 

প্রসঙ্গত, মনিপুর রাজ্যের নোনী জেলায় রেলপথ নির্মাণ কাজ চলছিল। সেই কাজে নিরপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। বুধবার রাতে নির্মাণ কার্য্য সংলগ্ন এলাকায় প্রবল বর্ষনের কারণে ব্যাপক মর্মান্তিক ভুমিধসের ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনীর শিবির চত্বর এলাকা আচমকা নিচে ধসে পড়ে যায়। এই ধসে চাপা পড়ে  সেনাবাহিনীর কয়েকজন জওয়ান ও রেলের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের মৃত্যু ঘটে। মৃত জওয়ানদের মধ্যে এই রাজ্যের ১১ জন বীর সৈনিক ছিল। অমর এই শহীদদের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা ব্লকের মংরুপাড়ার শঙ্কর ছেত্রী (৩০) ছিলেন। 

শনিবার মনিপুর থেকে বিমানে অমর শহীদদের মৃতদেহ  বাগডোগরা বিমানবন্দরে আনা হয়। সেখান থেকে সড়ক পথে শঙ্কর ছেত্রীর দেহ নাগরাকাটায় আনা হয় ।

বাগডোগরা থেকে সড়ক পথে ডুয়ার্সের বাগরাকোট, ওদলাবাড়ি, ডামডিম, মালবাজার, চালসা হয়ে নাগরাকাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন শঙ্কর ছেত্রী দেহ শেষবার দেখা ও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় সড়কের দু’ধারে অসংখ্য মানুষ ভীড় করে। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে ডুয়ার্সের মানুষ ‘ শংকর ছেত্রী অমর রহে ‘ স্লোগান তোলে।

তার দেহ বাড়িতে এসে পৌছতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। চোখে জল ছিল পাড়াপ্রতিবেশীদেরও।

এদিন মংরুপাড়ায় প্রয়াত শহীদের বাড়িতে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে বহু মানুষ উপস্থিত হন। উপস্থিত ছিলেন  রাজ্যের মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বারলা সহ অনান্যরা। সেনাবাহিনী গান সেলুট দিয়ে শহিদ শঙ্করকে সম্মান জানানো হয়। এরপর তার মরদেহ নিয়ে শোভাযাত্রা করে সৎকার করার জন্য জলঢাকা শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন শহিদ শঙ্করকে শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিল নাগরাকাটার রাস্তাতেও।

উল্লেখ্য, বাড়িতে শংকরের মা,অসুস্থ বাবা, স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের মেয়ে রয়েছে। তিন ভাইয়ের মধ্যে শংকরই ছোট। তার অন্য দুই দাদা ভিনরাজ্যের কর্মরত। আগে দার্জিলিং এ কর্মরত ছিল। কিছুদিন।আগেই মণিপুরে বদলি হয়। গত মার্চ মাসে বাড়িতে এসেছিল সে। এবার এল। কিন্তু নিথর দেহে কফিনবন্দী হয়ে। ভদ্র নম্র স্বভাবের জন্য এলাকায় জনপ্রিয় ছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here