মীমাংসা সভাতেই ভাইকে পিটিয়ে খুন করলো দাদা! অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। উত্তেজনা কুমারগঞ্জের গোবত্ত গ্রামে
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২ জুলাই ——- মীমাংসা সভাতেই ভাইকে পিটিয়ে খুন দাদার। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবত্ত গ্রামে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত দাদা ও তার পরিবারের লোকেরা। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই ব্যক্তির নাম যদু বর্মন (৫০)। গোবত্ত গ্রামে পাশাপাশি বাড়িতেই থাকত দুই ভাই। বড় ভাই কালীপদ বর্মনের চার ছেলে হলেও, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ছোট্ট সংসার ছিল যদূর। সোমবার ট্রাক্টর দিয়ে জমিতে চাষ করার ঘটনা নিয়েই দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত ঘটে। যা গড়ায় দীর্ঘ রাত অবধি। ভায়ে-ভায়ের যে বিবাদের খবর পেয়েই কয়েকজনকে নিয়ে মীমাংসা করতে এলাকায় ছুটে যান তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জব্বার আলী মন্ডল। রাতে মীমাংসা চলাকালীন সময়ে আচমকা শাবল ও লাঠিসোটা নিয়ে যদু ও তার ছেলে সনাতনের উপর চড়াও হয় কালীপদ বর্মন ও তার পরিবারের লোকেরা বলে অভিযোগ। বেধড়ক মারধরের জেরে সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যায় যদু বর্মন। যাকে প্রথমে কুমারগঞ্জ গ্রামীন হাসপাতাল এবং তারপরে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি, চিকিৎসকরা যদু বর্মন কে মৃত বলে ঘোষণা করে। এদিকে ওই ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান মৃত যদু বর্মনের ছেলে সনাতন বর্মন ও তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জব্বার আলী মন্ডল। মঙ্গলবার সকাল থেকে যে ঘটনাকে ঘিরেই রীতিমতো থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয় ওই গ্রামে। এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়েই এদিন সকালে গোবত্ত গ্রামে ছুটে যায় কুমারগঞ্জ থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। মৃতদেহটিকে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্তে নামে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত দাদা সহ তার পরিবারের লোকেরা সকলেই পলাতক রয়েছে।
মৃতর ছেলে সনাতন বর্মন বলেন, মাঝে মধ্যেই জ্যেঠু ও দাদারা বাবাকে মারার জন্য চড়াও হত। ওইদিন জমিতে ট্রাক্টর নামানোর মতো একটি সামান্য ঘটনা নিয়ে তারা বাবা ও তার উপর চড়াও হয়েছিল। বাবাকে পিটিয়ে মেরে ফেললেও তার স্ত্রীর জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। ঘটনা নিয়ে কালীপদ বর্মন সহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন।
মৃতর স্ত্রী ভাসানি বর্মন ও পুত্রবধূ সুকান্তি বর্মনরা বলেন, চোখের সামনে তাদের বাড়ির লোককে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে কালীপদ বর্মন, তার স্ত্রী ও দুই ছেলে। অভিযুক্তদের ফাসির সাজা চান তারা।
প্রতিবেশী মজিদি মন্ডল বলেন, এলাকায় এরকম নৃশংস ঘটনা এই প্রথমবার ঘটেছে। ঘটনার পিছনে যারাই যুক্ত থাকুক না কেন প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।
এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জব্বার আলী মন্ডল বলেন, অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। দুই ভায়ের ঝামেলার মীমাংসা করতে গিয়ে তাদের মারধরের মধ্যে পড়ে শাবল দিয়ে তার পরনে থাকা লুঙ্গিটি ছিড়ে গিয়েছে। ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট স্তম্ভিত হয়েছেন তিনিও। তার সামনেই অভিযুক্ত দাদা কালীপদ বর্মন যদুকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।