ঝারগ্রাম এর জঙ্গলমহলের ছোটুদা ! যার উপর হয়েছে ১৫০ জন বাচ্চার পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব !

0
139

ঝারগ্রাম এর জঙ্গলমহলের ছোটুদা ! যার উপর হয়েছে ১৫০ জন বাচ্চার পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব ! কিন্তু ছোটু দার কাছে না আছে অর্থ বল , না আছে সেরকম কোন সাহায্য ! তবুও ছোটু দা জঙ্গলমহলের অসহায় পিছিয়ে পড়া বাচ্চাদের পড়াশুনা করে শিক্ষিত করে তোলার জন্য নিজের লোনের কিস্তি বাকি রেখে বছরে ৩৬৫ দিনেই বাচ্চাদের শিক্ষা দান করে চলেছেন ।
হ্যাঁ, এই সেই ছোটু দা ; কিছুদিন আগে যার এখান থেকেই সামনে এসে ছিল নার্সারি পড়ুয়ার শিক্ষিকা হয়েছেন ক্লাস ৪ এর পড়ুয়া দশ বছরের রাখি মজুমদারের কথা । তবে আমাদের আজকের গল্পটা ছোটুদাকে নিয়েই ।
জঙ্গলমহলের এক ছোট্ট বিউটিশিয়ান । ৮ থেকে ৮০ সকলেই যাকে ছোটু দা বলে এক নামেই চেনেন । ভালোবাসেন । যে মানুষটার কিচ্ছু নেই তবুও সমস্ত কিছু সমাজের বাচ্চাদের উৎসর্গ করে দিয়েছেন । । তাই তিনি না পাওয়ার যন্ত্রণাটা অনুভব করেছিলেন । তাই আজ ছোটুদা ১৫০ জন গরিব দুঃস্থ বাচ্চাদের কাছে ভগবান হয়ে উঠেছেন ।
যে মানুষটা নিজে না খেয়ে, না ভালো জামা কাপড় পড়ে নিজের উপার্জনের সমস্ত অর্থটুকুই দিয়ে দিচ্ছেন এই দেশ স্বজন গরিব দুস্থ বাচ্চাদের পড়াশোনার স্বার্থে । তাই নয় নিজের সব স্বার্থ চাপা রেখে লোন করে বাচ্চাদের পড়াশোনা চালাচ্ছেন শিলদা গ্রামে ঝাড়গ্রাম জেলার ছোটু দা ।

এই ছোটু তার লড়াই খুব কঠিন ! কারণ ছোটদের কাছে না আছে অর্থ না আছে সে রকম সাহায্য । কিন্তু মাথার উপরে রয়েছে দেড়শ জন বাচ্চার পড়াশোনা করানোর দায়িত্ব । যেমন করে হোক তাদের খরচ চালাতেই হবে । কোথা থেকে কোনরকম সাহায্য না আসায় ছোটু দাকে কাজ করতে যেতে হচ্ছে কখনো কোন বাচ্চাকে কোলে নিয়েই কনে সাজানোর কাজ । বাচ্চাদের প্রতি ছোটু দার ভালোবাসা ঠিক ঠিক যেন মা-বাবার মতই । মা যেমন নিজের সন্তানকে কোলে নিয়ে কাজ করে যান সেরকম অন্যের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে কাজ করে চলেছেন ছোটু দা । তাও আবার ১৫০ জন অসহায় দুস্থ বাচ্চাদের জন্য । এদিকে ছোটু দার মাথার উপরে রয়েছে ব্যাংকের লোন । তাই একমাত্র সম্বল বিউটি পার্লার । আর এবারে তার সেই কাজেই হাত লাগিয়েছে লতা, সীমা,নমিতা , অসহায় পরিবারের মহিলারা । কারণ ছোটু দার এই পার্লার চললে তবে এতগুলো বাচ্চার লেখাপড়ার খরচ চলবে ।

গত বছর পুজোতে বাচ্চাদের নতুন জামা কাপড় কিনে দেওয়ার জন্য ছোটুদা নিজের শেষ সম্বল গলার সোনার চেন বিক্রি করে দিয়েছিলেন । এছাড়াও তার এক আদিবাসী বোনের বাবার চিকিৎসার জন্য নিজের সোনার আংটি বিক্রি করে তার হাতে টাকা তুলে দিয়েছিলেন। হ্যাঁ অন্যের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়া এরকম হাজারো সেক্রিফাইসের কথা রয়েছে ছোটদের জীবনে । হয়তো কেউ জানেন কিন্তু কেউ জানেন না তবে ছোটদা এসব প্রচারের আড়ালেই করে গিয়েছেন । আজকের এই ছোটদের কথা বললে শেষ হবেনা । শুনলে সকলের চোখের কোনে জল আসবে । তবে এতগুলো বাচ্চাকে নিয়ে কাজ করা এতটাও সহজ নয় তাই ছোটু দার এই কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রবিন, পিক্লু, সুনাম, এই ৩বন্ধু,,২ মামি রেখা সুমিত্রা, এছাড়া বোন রাখি,
দীপিকা, স্নেহলতা, মংগলী, তনুশ্রী ও সুস্মিতা করমকার,কৌশিক এর মত সহযোদ্ধারা ।
জানা যায়, ব্যাংকের লোন থাকায় অনেকহেনস্থল শিখার হতে হয়েছে ছোটু দাকে । তবুও ছোটু দা বাচ্চাদের কাচ বন্ধ রাখেনি । এমনকি ছোটু দা ফেসবুকে বারবার হেল্প চেয়ে পোস্ট ও করেছিলেন । তবুও ছোটুদার পাশে গিয়ে কেউ দাঁড়ায়নি । অবশেষে ভিক্ষা করে করেই একাই লড়াই করে কাজ করে গিয়েছেন ছোটুদা । বাচ্চাদের জন্য ছোটুদা কাজ করে চলেছেন এই আশায়, যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি এসে তাদের পাশে দাঁড়ায় । তবে রবিন পিক্লু সুনাম মত বন্ধু ছায়ার মত তার পাশে থাকলেও অন্য কেউ তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি । তবে ছোটু দা চান কোন সহৃদয় ব্যক্তি এই বাচ্চাদের পাশে এসে দাঁড়াক তাহলে হয়তো জঙ্গলমহলের পিছিয়ে পড়া এই বাচ্চারা অনেকটাই শিক্ষিত হতে পারবে । এবং জঙ্গলমহল কে অনেকটাই উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে ।

আজকে এই স্বার্থপরতার পটভূমিতে ! ছোটুটা যেন ভগবানের অন্য আরেক রূপ । তবে ছোটুদা সমাজের জন্য এত কিছু করার পরেও প্রচারের আড়ালে । যে মানুষটা নিঃস্বার্থভাবে নিজের সমস্ত কিছু উজাড় করে দিয়ে সমাজের জন্য এত কিছু করে চলেছেন । হয়তো কেউ চিনলেও,মনে রাখার চেষ্টা করি না তাকে । এখানে প্রচারের আলো এসে পড়ে না তাদের চোখে । কোন বেসরকারি চ্যানেল , যাদের জনপ্রিয়তা আজকের বাজারে অনেক বেশি। তারা জনপ্রিয় মানুষদের নিয়ে ব্যস্ত হলেও , এরকম প্রকৃত সমাজসেবী মানুষদের প্রচারে নিয়ে এসে সামনে আনার রেশমাত্র নেই । আর তাই হয়তো প্রচারের অভাবে স্বার্থপর মানুষদের ভিড়ে চাপা পড়ে রয়েছে কিংবা হারিয়ে যাচ্চে ছোটু দার মত প্রকৃত সমাজসেবী মানুষেরা । ছোটু দার এই কাজকে কুর্নিশ জানায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here