উত্তর দিনাজপুর ঃ
শারীরিক ও আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে দুরে ঠেলে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় অভূতপূর্ব ফল করেছে রায়গঞ্জের এক ছাত্রী। রায়গঞ্জ শহরের মিলন পাড়ার বাসিন্দা চিরঞ্জিতা বোস পার্বতীদেবী বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তার বাবা চিন্ময় বোস পেশায় বেসরকারি গাড়ির চালক। মা গৃহবধূ। ছোট থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় আবদ্ধ হয়ে পরে চিরঞ্জিতা। স্বাভাবিকের তুলনায় তার উচ্চতা অনেকটাই কম। এছাড়াও কথাবার্তাতেও জড়তা আসে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি পরিবারে যথেষ্ট আর্থিক প্রতিকূলতাও রয়েছে। বাবার সামান্য আয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। কিন্তু এর মাঝেও নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিল চিরঞ্জিতা। করোনাকালে মনোযোগ সহকারে অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষিকা ও গৃহ শিক্ষকদের সহায়তায় এবারে মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের উপরে নম্বর পায় সে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৬৩। ৪ টি বিষয়ে রয়েছে লেটার মার্কস। শুক্রবার ফল হাতে আসতেই খুশীর আবহ চিরঞ্জিতার পরিবারে। কৃতী এই ছাত্রী জানিয়েছে, রেজাল্ট আরও কিছুটা ভালো করার ইচ্ছে ছিল তার। সকলের সহায়তায় এই ফল করতে পেরেছে সে। আগামীতে একজন আই এ এস অফিসার হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় । তবে আর্থিক প্রতিকূলতার জন্য উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তায় রয়েছে চিরঞ্জিতা।
এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছিলাম তার বাবা চিন্ময় বোসের সাথে। মেয়ের সাফল্যে খুশী তিনি। তবে একই ভাবে মেয়ের উচ্চ শিক্ষার কথা ভেবে চিন্তিত বাবাও। এমতাবস্থায় সরকার কিংবা কোনো সহৃদয় ব্যক্তির সহায়তার জন্য আবেদন জানিয়েছেন চিন্ময় বাবু।
হাজারো শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও অদম্য মানসিক জোড়ই সব বাধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে যাওয়ার একমাত্র পথ, এই ধারনা কে পাথেয় করেই এগিয়ে চলেছে মিলনপাড়ার এই ছাত্রী।