দিঘী সংস্কারের কাজ শুরু হতেই রাতারাতি তপনে একাধিক তৃণমূল নেতার নামে জমির রেকর্ড! প্রশ্ন তুলে সরব বিজেপি সাংসদ। অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি তৃনমুলের।

0
1010

পিন্টু কুন্ডু , বালুরঘাট, ১২ জুলাই:- দিঘী সংস্কারের কাজ শুরু হতেই রাতারাতি একাধিক তৃণমূল নেতার নামে দিঘী সংলগ্ন জমির রেকর্ড। করোনা আবহের মধ্যে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে সরব  বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ। রবিবার অনলাইনে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন সাংসদ  সুকান্ত মজুমদার। জেলার প্রাচীনতম তপন দীঘির পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু জায়গা ১০ জন তৃণমূল নেতার নামে সমপরিমানে রেকর্ড হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদ। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি তৃণমূলের। 

সংসদের অভিযোগ তপনের তৃণমূল  বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার আপ্তসহায়ক থেকে শুরু করে তার ঘনিষ্ঠ ১০ জন নেতার নামে সমান ভাগে ভাগ করা হয়েছে ওই জায়গা। গত জুন মাসের ১৫ তারিখে সরকারিভাবে ওই দশ তৃণমূল নেতার নামে রেজিস্ট্রেশনও হয়েছে। দীর্ঘদিন ওই জমি দীঘির অংশ বলে সকলে জানলেও হঠাৎ করে তা তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নামে রেকর্ড হওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ। শুধু তাই নয়, ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন। 
রবিবার বিকেলে সাংসদের ওই সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ করা হয়েছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নামের তালিকাও। যাদের নামে তপন দীঘির পার্শ্ববর্তী এলাকা রেজিস্ট্রেশন হয়েছে তারা হলেন, প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার আপ্ত সহায়ক বলে উল্লেখ করা রিন্টু বসাক, তৃণমূল নেত্রী কৃষ্ণা দত্ত ধর, তৃণমূল নেতা ওমর ফারুক, তপন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তাপস কুমার মন্ডল, তৃণমূল নেতা দেলোয়ার হোসেন, ৬ নম্বর চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী অজয় বর্মন, তৃণমূল নেতা সমিত বসাক, তৃণমূলের আরেক প্রভাবশালী নেতা আমজাদ আলী মন্ডলের নিকট আত্মীয়সৈফুদ্দিন সরকার, তৃণমূল নেতা মিঠুন মোদক এবং তপন ব্লক অফিসের  কর্মচারী তথা মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার ঘনিষ্ঠ বলে উল্লেখ করা সুব্রত দাসের নাম রয়েছে সেই তালিকায়।
উল্লেখ্য সম্প্রতি তপন দিঘি নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলতে সংস্কারে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার । ৮৩ একর জায়গায় অবস্থিত দীঘি সংস্কারের জন্য রাজ্য মৎস্য দপ্তর ৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করে । মেদিনীপুরের এক ঠিকাদার সংস্থা ওই কাজ শুরু করে । অভিযোগ কাজ শুরু হতেই দিঘির পার্শ্ববর্তী কিছু জায়গা তৃণমূল নেতারা তাদের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নিয়েছেন। যা আগে দিঘীর অংশ বলেই জানা ছিল সকলের বলে দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ।

বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই রহস্যজনকভাবে তপন দিঘীরপাড়  সহ বেশ কিছু এলাকা তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নামে রেকর্ড হয়েছে। আগে তিনি পুকুর চুরি শুনেছেন কিন্তু এখন দেখছেন দীঘি চুরি। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

মন্ত্রীর আত্মসহায়ক রিন্টু বসাক বিজেপির তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ওটা দিঘীর জায়গা নয়, টাকা দিয়ে রায়তু জায়গা কেনা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানিয়েছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কাজ শুরুর সময় পার্থনাথ দাস নামে এক ব্যক্তি তার জায়গা বলে দাবি করেছিলেন। যার কাছ থেকেই এলাকার কিছু মানুষ তা কিনে নিয়েছেন। 

অতিরিক্ত জেলাশাসক  (এলআরও) প্রণব ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি কাগজপত্র না দেখে কোন মন্তব্য করতে পারবেন না। তবে সরকারি জমি কোন ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here