৬০ টাকার বাজিতে বাজিমাত! এক রাতেই কোটিপতি দিনমজুর হিরালাল
বালুরঘাট, ২৭ ফেব্রুয়ারী —– রূপকথা শুধু গল্পেই হয় না, বাস্তবেও ঘটে! দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের পুন্তর গ্রামের দিনমজুর হিরালাল সরেন যখন বুধবার বিকেলে বাজারে গিয়ে মাত্র ৬০ টাকার লটারি টিকিট কাটছিলেন, তখন হয়তো নিজেও ভাবেননি— রাত পোহানোর আগেই তিনি কোটিপতি হয়ে যাবেন!
সন্ধ্যা ৬টা ২০-তে মোবাইলে লটারির ফলাফল মিলিয়ে থমকে যান হিরালাল। বারবার চোখ কচলান, ঠিক দেখছেন তো? সত্যিই তিনি এক কোটি টাকা জিতেছেন!
স্ত্রী চম্পা কিস্কু খবর শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবেগে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, “এবার টিনের চালের ঘর ছেড়ে পাকা বাড়ি হবে!” খবর বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে গোটা গ্রামে শোরগোল— “পুন্তরের হিরালাল কোটিপতি!”
হিরালালের পরিবার বলতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, তিন ছেলে আর এক মেয়ে। দিন চলে রোজকার মজুরিতে, ঘরে দুই কামরার টিনের চাল। একফোঁটা বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে জল পড়ে, চালিয়ে নিতে হয় যেভাবে হোক।
তবে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে সময় লাগে না! সেই ফাঁকা পকেটের দিনমজুর রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেলেন। পুলিশেরও দেরি হয়নি। রাতেই কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে হিরালালকে থানায় নিয়ে আসে, নিরাপত্তার জন্য। সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রাত ৯টার সময় বাড়ি ফেরেন তিনি।
পরদিন সকাল হতে না হতেই হিরালালের বাড়ির সামনে উপচে পড়ে মানুষের ঢল! কেউ এসেছে শুভেচ্ছা জানাতে, কেউ এসেছে জানতে “এত টাকা দিয়ে কী করবে?” কেউ বা শুধুই এক ঝলক কোটিপতিকে দেখতে!
হিরালাল সরেনের সহজ উত্তর— “প্রথমে একটা পাকা বাড়ি করব।”তারপর? একটু থেমে বলেন, “কিছু ঋণ শোধ করতে হবে। তারপর কী করব, সেটা এখনো ভাবিনি!”
তবে কোটিপতি হওয়া যেমন আনন্দের, তেমনই সঙ্গে আসে নিরাপত্তার ঝুঁকি। কুমারগঞ্জ থানার আইসি রাম প্রসাদ চাকলাদার জানিয়েছেন, “লটারি জেতার খবর ছড়িয়ে পড়ায় আমরা তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।”
গতকালও হিরালাল ছিলেন দিনমজুর, আজ কোটি টাকার মালিক। এতদিন টাকার অভাবে যা যা করতে পারেননি, এখন তা করার সুযোগ এসেছে।
গ্রামের মানুষের মুখে একটাই কথা— “লাখপতি নয়, সরাসরি কোটিপতি!”
তবে লটারির টাকা অনেকের জীবন গড়ে দেয়, আবার অনেকের জীবন তছনছও করে। এখন দেখার, হিরালাল এই এক কোটি টাকা দিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ কতটা বদলাতে পারেন!