৫০ না, ১০০ চাই—না দিতেই মার! দেহাবন্ধ ফাঁড়ির নাকা চেকিং ঘিরে ভাইরাল মারধরের ভিডিও, তোলাবাজির অভিযোগে বিদ্ধ কুশমন্ডি থানার পুলিশ
বালুরঘাট, ২৫ জুন —– নাকা চেকিংয়ের নামে প্রকাশ্যে তোলাবাজি! ঘুষ না দিলে পুলিশই হয়ে উঠল ‘গুণ্ডা’? মাত্র ৫০ টাকা ঘুষ দিতে চাওয়ায় মাঝরাতে পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই মাছ ব্যবসায়ী ও চালককে রাস্তায় নামিয়ে বেধড়ক মারধর। চরম লজ্জার এই দৃশ্যই উঠে এল ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে।
ঘটনাস্থল কুশমন্ডি থানার অন্তর্গত দেহাবন্ধ এলাকা। অভিযোগ, শিলিগুড়িগামী মাছ বোঝাই পিকআপ ভ্যানগুলিকে চেকপোস্টে দাঁড় করিয়ে ১০০ টাকা করে ঘুষ দাবি করেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। চালকরা আপত্তি জানিয়ে ৫০ টাকা দিলে সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তর্কাতর্কি। এবং পরক্ষণেই—মার, গালাগালিতে ভেসে যায় গোটা রাস্তা! পেটানো হয় গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে। ছিঁড়ে যায় জামাকাপড়, ভেঙে পড়ে আত্মসম্মান।
এই ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকল গাড়িচালক বকুল মাহাতো এবং সহকর্মী প্রশান্ত মাহাতো। ভাঙা গলায় তাঁরা বলেন—
“১০০ টাকা না দিতে চাওয়াতেই আমাদের বেধড়ক মারধর করা হয়। ঘুষ চাওয়া তো ছিলই, তার ওপর মাছ ব্যবসায়ীকেও হেনস্থা করা হয়। আমরাই এই ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করি। বিচার চাই।”
এদিকে এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই রীতিমতো আগুন ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অভিযুক্ত কুশমন্ডি থানার এএসআই জয়নাল আবেদিন ও কনস্টেবল নারায়ণ বর্মনের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
যদিও অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কুশমন্ডি থানার আইসিও। তাদের দাবি এমন অভিযোগ সঠিক নয়।
তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন গঙ্গারামপুর মহকুমার পুলিশ আধিকারিক দ্বীপায়ন ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, “ভাইরাল ভিডিওর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রীর মুখের ওপরই কি থুথু ছেটাচ্ছে পুলিশ?
মাত্র ক’দিন আগেই শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের ঘুষ ও দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। অথচ তার পাশ্ববর্তী জেলার বুকেই পুলিশ ফাঁড়ির সামনে, সাধারণ মানুষকে এমন হেনস্থা?