হিলিতে স্লট বুকিং শুরু হতেই ফাপরে অবৈধ ট্রাক মালিকরা, ভাড়া বাড়ানোর দরবার নিয়ে মধ্যস্থতায় বসে বিপাকে জেলা তৃণমূল সভাপতি ও চেয়ারম্যান
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৪ অক্টোবর ———-– হিলির তোলাবাজি বন্ধ করতে সরকারী উদ্যোগে চালু হওয়া স্লট বুকিং শুরু হতেই ফাপরে অবৈধ ট্রাক মালিকরা। ভাড়া বাড়ানো ও সহানুভূতির আবেদন নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বর কাছে দরবার ট্রাক মালিকদের। মধ্যস্থতায় নেমে বিপাকে জেলা তৃণমূল সভাপতি ও চেয়ারম্যান। চলল তাদের সামনেই ট্রাক মালিক ও এক্সপোর্টারদের মধ্যে একে অপরকে হুশিয়ারি দেবার প্রক্রিয়াও। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় পতিরামের পথসাথীতে। ট্রাক মালিকদের একাংশ ও হিলি এক্সপোর্টারদের মধ্যে বিবাদের মাত্রা চরমে পৌছাতেই সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান এক্সপোর্টাররা। যদিও পরবর্তীতে পরিস্থিতি কিছুটা বেগতিক বুঝে আলোচনা অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যেতে হয়েছে জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃনাল সরকার ও চেয়ারম্যান নিখিল সিংহ রায়কে।
জানা যায়, হিলি আন্তর্জাতিক বানিজ্য কেন্দ্র দিয়ে মালবোঝাই লরি পারাপার নিয়ে বেশকিছুদিন ধরে শুরু হয়েছিল দিন রাতে তোলাবাজি। যার জেরে কার্যত অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা। যা নজরে আসতেই অনান্য বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বানিজ্য কেন্দ্রের পাশাপাশি হিলিতেও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে চালু করা হয় স্লট বুকিং সিস্টেম। যার মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসায়ীরা ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্লট বুকিং করে তাদের মাল বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন। আর এরজেরেই হিলির তোলাবাজি কার্যত লাটে উঠেছে। অন্যদিকে এই মাল পারাপারের কাজে ব্যবহৃত প্রায় দুহাজার লরি রয়েছে হিলিতে। যাদের অধিকাংশরই বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। আর তার জেরে অনলাইন প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে পড়েছে ওইসব লরি মালিকেরা। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীরাও হিলি ট্রাক এসোসিয়েশনের ওইসব অবৈধ লরিগুলিকে কাজে লাগাতে নারাজ। আর এনিয়েই চরম বিপাকে পড়ে শতাধিক লরি মালিক শরনাপন্ন হয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি ও চেয়ারম্যানের। যাদের সমস্যা উপলব্ধি করেই লরি মালিক ও এক্সপোর্টারদের নিয়ে একটি জরুরী বৈঠকের ডাক দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃনাল সরকার ও চেয়ারম্যান নিখিল সিংহ রায়। পতিরামের পথসাথীতে ওই মিটিং চলাকালীন সময়ে তুমুল ঝামেলা বাধে লরি মালিক ও এক্সপোর্টারদের মধ্যে। তৃণমূল নেতৃত্বদের উপস্থিতিতেই একে অপরকে হুশিয়ারি দেন এক্সপোর্টাররা ও লরি মালিকরা। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াতেই মিটিং ছেড়ে বের হয়ে যান এক্সপোর্টাররা। এরপরে পরিস্থিতি কিছুটা বেগতিক বুঝে সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান তৃণমূল সভাপতি ও চেয়ারম্যানও। যদিও তাদের দাবি আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনটি ট্রাক সিন্ডিকেট ও এক্সপোর্টারদের নিয়ে ১৫ জনের একটি কমিটি করে ট্রাক মালিকদের সমস্যা সমাধানের দিশা দেখানো হয়েছে। যদিও সেসব কমিটির বিষয় উড়িয়ে দিয়েছেন হিলি এক্সপোর্টাস এসোসিয়েশন। তাদের দাবি কোন কমিটি গঠন হয়নি। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় পরবর্তীতে আবার আলোচনায় বসবার কথা বলা হয়েছে।
হিলি ট্রাক সিন্ডিকেটের তরফে সন্দীপ দত্ত জানিয়েছেন, তাদের অধীনে দুহাজার ট্রাক রয়েছে। যাদের কোন ভাড়া না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন তারা। ট্রাকের ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি লোকাল ট্রাক চালকদের এই এলাকায় সুবিধা দেবার দাবি নিয়েই এদিন তারা আলোচনায় বসেছেন। কিন্তু এক্সপোর্টাররা রাজি না হওয়ায় সভা ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন।
জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃনাল সরকার বলেন, ট্রাক মালিকদের সমস্যার কথা তাদের জানানো হয়েছিল। সে পরিপ্রেক্ষিতেই একটি আলোচনা সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। যা ফলপ্রসূ হয়েছে।
হিলি এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের তরফে অশোক জোয়ার্দার জানিয়েছেন, আলোচনা সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল ঠিকই কিন্তু কোন কিছুই হয়নি। কোন কমিটি গঠন হয়নি। পরবর্তীতে আবার আলোচনায় বসবার কথা বলা হয়েছে।