হিলিতে বাংলাদেশি যুবকের তাণ্ডবে রক্তাক্ত গৃহবধূ! গ্রামবাসীর হাতে পাকড়াও অভিযুক্ত, চলল গনপিটুনি
বালুরঘাট, ২০ আগষ্ট —- দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্ত লাগোয়া হিলির জয়ন্তীপুর মঙ্গলবার রাতে যেন রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। সীমান্ত পেরিয়ে এসে এপার বাংলার ঘরে ঢুকে দুঃসাহসিক তাণ্ডব এক বাংলাদেশি যুবকের। সঙ্গে ছিল স্থানীয় এক সহযোগীও। অভিযোগ, গভীর রাতে গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে চুরির চেষ্টা, বাধা পেতেই ধারালো অস্ত্রের কোপে রক্তাক্ত হলেন গৃহবধূ। তার পরই অভিযুক্তদের খোঁজে তোলপাড় গোটা এলাকা। অবশেষে দু’দিন পর গ্রামে ফিরতেই উত্তেজিত জনতার হাতে ধরা পড়ল দুই যুবক। শুরু হয় বেধড়ক গণপিটুনি। শেষমেশ পুলিশের হাতেই তুলে দেওয়া হয় তাদের। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে সীমান্তের গ্রামাঞ্চল।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রণব দাস ও মদন দাস। প্রণব বাংলাদেশের নাগরিক। কয়েকদিন ধরে আত্মগোপন করে ছিল জয়ন্তীপুরের বাসিন্দা মদন দাসের বাড়িতে। রবিবার গভীর রাতে তারা দু’জনে হানা দেয় প্রতিবেশী কল্পনা দাসের বাড়িতে। অভিযোগ, চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই ঢুকেছিল তারা। কিন্তু কল্পনা দেবী বাধা দিতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযুক্তরা। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়েন তিনি। চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করেন বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে কল্পনা দেবী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হিলি থানায়।
যে অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই উত্তেজনা টগবগ করতে থাকে গোটা জয়ন্তীপুর। মঙ্গলবার রাতে প্রণব ও মদন গ্রামে ফিরতেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। চারদিক থেকে মানুষ ছুটে এসে দু’জনকে ঘেরাও করে। মুহূর্তে শুরু হয় মারধর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হিলি থানার পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। বুধবার তাদের বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
বালুরঘাট জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী শিবাজি সিংহ রায় জানান, “ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক মহিলাকে আক্রমণের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। আদালত ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।”
এদিকে এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে সীমান্ত নিরাপত্তা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা দিনের পর দিন গ্রামে আত্মগোপন করছে। নজরদারির ফাঁকফোকরে বাড়ছে অপরাধ। বাসিন্দাদের স্পষ্ট দাবি—কড়া নজরদারি না বাড়ালে আগামী দিনে সীমান্তের গ্রামাঞ্চল রক্তাক্ত অশান্তির আঁতুড়ঘর হয়ে উঠতে পারে।