হাসিনার ফাঁসির আদেশে সীমান্তে অশান্তির আশঙ্কা!

0
53

হাসিনার ফাঁসির আদেশে সীমান্তে অশান্তির আশঙ্কা! ৭৭ টি পন্যের উপর ৬০ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে ছয় থানাকে বিশেষ নির্দেশিকা জেলা প্রশাসনের। থমথমে দক্ষিণ দিনাজপুর

বালুরঘাট, ২০ নভেম্বর —– বাংলাদেশে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ জারি হতেই দক্ষিণ দিনাজপুর সীমান্তজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করল জেলা প্রশাসন। রাতারাতি জারি হয়েছে ৬০ দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞাও। ১৮ নভেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত, সীমান্তজুড়ে জারি থাকছে রাতভর এই বিশেষ নিষেধাজ্ঞা।প্রশাসনের এই নির্দেশিকায় সীমান্ত লাগোয়া ছ’টি থানায়—বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, হিলি, গঙ্গারামপুর, কুশমন্ডি ও তপনে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে বিশেষ সতর্কবার্তা।

জেলা শাসক বালাসুব্রমনিয়ান টি. বিএন এসএস-এর ১৬৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, সীমান্তের ৮ কিলোমিটারের মধ্যে মোট ৭৭ ধরনের পণ্য—চাল, গম, ডাল, শিশু খাদ্য, মাছ, প্লাস্টিক সামগ্রী, টায়ার-টিউব থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক দ্রব্য—সবই সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সীমান্তমুখী পথে আনা-নেওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ। সাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা, ট্রাক বা মাথায় বোঝা—কোনোভাবেই এই সামগ্রী বহন করা যাবে না।

এছাড়াও, নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সীমান্তের ৩০০ মিটারের মধ্যে রাতে গবাদিপশু চরানো যাবে না। আর সীমান্ত বেড়া থেকে ৫০ মিটারের মধ্যে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার যে কোনও ফসল চাষও আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, রাতের অন্ধকারে সীমান্তে জীবজন্তু ও বিভিন্ন পণ্য পাচারের প্রকোপ বাড়ায় এই সতর্কতা প্রয়োজনীয়। পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে সীমান্তবাসীর ক্ষতি এবং শান্তিভঙ্গ ঘটাতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে সরকারি চিঠিতে।

যদিও প্রশাসনের একাংশের মত, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরেই সীমান্তে এই বাড়তি সতর্কতা। তবে জেলা শাসক বিষয়টি মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, “সীমান্ত এলাকায় প্রায়শই এই বিশেষ নির্দেশিকা জারি থাকে। এটি সম্পূর্ণই প্রশাসনিক প্রয়োজন।”

তবুও পরিস্থিতি থমথমে দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্তজুড়ে। স্থানীয়দের উদ্বেগ—এই দুই মাস সন্ধ্যার পর বাজার করা, শিশুদের খাবার আনা, মাছ বা কৃষিকাজের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বহন করা—সবই কঠিন হয়ে যাবে। সীমান্তের প্রতিটি গ্রামে তাই এখন উদ্বেগের ছায়া। জীবিকা, রোজকার চলাফেরা, এমনকি জরুরি প্রয়োজনেও যে সমস্যায় পড়তে হবে, তা নিয়েই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাসিন্দাদের কপালে। তাদের প্রশ্ন—নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে তাঁদের নিত্যদিনের জীবন যাপনে কতটা সংকট তৈরি হতে চলেছে আগামী ৬০ দিনে তা যেন বলার অপেক্ষা রাখে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here