স্বাধীনতার আবেগে ভেসে উঠল শহর, রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে নিয়ে বালুরঘাটে সুসজ্জিত র্যালি পয়োধি ধরের
বালুরঘাটের ক্যালেন্ডারে ১৮ আগস্ট এক অনন্য দিন। স্বাধীনতার ইতিহাসে যেখানে গোটা দেশ ১৫ আগস্টকে স্মরণ করে, সেখানে দক্ষিণ দিনাজপুরের সদর শহর বালুরঘাট স্বাধীন হয়েছিল তিন দিন পরে। সেই দিনটিকেই ঘিরে সোমবার বিকেলে শহর জুড়ে দেখা গেল দেশাত্মবোধের ঢেউ।
খাদিমপুরের বিশিষ্ট চিকিৎসক পয়োধি ধরের উদ্যোগে রঘুনাথপুরে শহরপ্রবেশদ্বার থেকে সূচনা হয় এক বর্ণাঢ্য র্যালির। জাতীয় পতাকা উড়িয়ে যে যাত্রার শুভারম্ভ করেন তিনি নিজেই। হুডখোলা গাড়িতে সেই পতাকাকে সগৌরবে বহন করেন চিকিৎসক পয়োধি ধর। যার সাথে হাজির ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার মিত্র। সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক সঞ্চারি ধর সহ শহরের অগনিত সাধারণ মানুষ ও পড়ুয়া—সকলেই। শহর ঘুরে এই দেশাত্মবোধক র্যালি পৌঁছয় হাইস্কুল মাঠে।
র্যালির প্রধান আকর্ষণ ছিল সুসজ্জিত ট্যাবলো, যেখানে ফুটে ওঠে বালুরঘাটের স্বাধীনতার ইতিহাস—১৪ আগস্ট পাকিস্তানি সেনার দখলদারি, ১৫ আগস্ট পাকিস্তানি পতাকার অবমাননা, প্রধান শিক্ষক কুমুদরঞ্জন চ্যাটার্জীর সাহসী প্রতিবাদ, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সশস্ত্র প্রতিরোধ এবং অবশেষে ১৮ আগস্ট ভারতীয় সেনার প্রবেশে শহরের মুক্তি। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের আবহ যেন ফের জীবন্ত হয়ে উঠল এদিনের রাস্তায়।
মানুষের হাততালি আর দেশাত্মবোধক স্লোগানে গোটা শহর যেন মেতে উঠেছিল উৎসবের আবহে। কোথাও দেখা গেল শিশুদের হাতে কাগুজে তিরঙ্গা, কোথাও আবার প্রবীণরা স্মৃতিচারণায় মগ্ন। বালুরঘাটবাসীর কাছে দিনটি যেন শুধু স্মৃতিই নয়, আত্মপরিচয় ও গৌরবের প্রতীক।
ডা. পয়োধি ধর বলেন, “১৮ আগস্ট বালুরঘাটবাসীর কাছে এক আবেগঘন দিন। সেই দিনটিকে স্মরণ করে র্যালির আয়োজন করতে পেরে আমি গর্বিত। এই শহরের মানুষই আমাকে শক্তি জুগিয়েছে।”
ইতিহাস আর আবেগের সেতুবন্ধনে শহরের আকাশ ভরে উঠল তিরঙ্গার রঙে। স্বাধীনতার ৭৯ বছর পরে দাঁড়িয়ে বালুরঘাট ফের প্রমাণ করল—এই মাটির মানুষ স্বাধীনতার মূল্য ভুলে যায়নি।