সুকান্তর গড়ে সবুজে ভাসলো সমবায়!

0
120

সুকান্তর গড়ে সবুজে ভাসলো সমবায়! বংশীহারির রহিমপুরে বাম-বিজেপি ও কংগ্রেসের সাতবছরের দুর্গ ভেঙে ইতিহাস গড়লো তৃণমূল

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৩০ ডিসেম্বর —— রহিমপুর সমবায় সমিতির ভোটে একতরফা জয় এনে নজির গড়ল তৃণমূল কংগ্রেস। দীর্ঘ সাত বছর ধরে বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি জোটের দখলে থাকা সমবায় এবার গেরুয়া-লাল পতাকা ছাপিয়ে সবুজে রঙিন হল। রবিবার বংশীহারির নারায়নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ৯ আসনের সমবায় ভোটে তৃণমূল দখল করল ৮টি আসন, আর বিরোধীদের কপালে জুটল মাত্র ১টি আসন।

দীর্ঘ বছর পর এই বিপুল জয়কে ঘিরে মধ্যরাতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে তৃণমূল শিবির। রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, “মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমুখী কাজের ওপর ভরসা রেখেছে। বিরোধীদের অপপ্রচার মানুষ গ্রহণ করেনি। এই জয় পুরসভা নির্বাচনের আগেই আমাদের জয়যাত্রার বার্তা দিয়েছে।”

তবে বিরোধীরা এই ফলাফলে চুপ করে বসে নেই। বিজেপির টাউন সভাপতি দীপেশ বসাক অভিযোগ করে বলেন, “গণতন্ত্র নেই রাজ্যে। প্রশাসনের সাহায্যে ভোট লুট করেছে তৃণমূল। বয়স্ক ভোটারদের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত জনমতের প্রতিফলন হয়নি এই সমবায় ভোটে।” সিপিএমের বংশীহারি এরিয়া কমিটির সম্পাদক বাবলু দে একই অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “প্রথমে শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও বহিরাগতদের দিয়ে ভয় দেখিয়ে ভোট লুট হয়েছে।”

বংশীহারি ব্লকের কংগ্রেস সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বলেন, সমবায় সমিতি বাচাও বলে একটি কমিটির দখলে ছিল এই সমবায় সমিতিটি। যেখানে তৃণমূল বাদে সমস্ত রাজনৈতিক দলই ছিল। যারাই এই নির্বাচনে হেরে গিয়েছে।

তৃণমূল এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, “এগুলো বিরোধীদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ। কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি, ভোট শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে। মানুষ উন্নয়নের জন্যই ভোট দিয়েছে।”

রাজনৈতিক মহল বলছে, খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতির গড়ে ২০১৬ সাল থেকে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস জোটের দখলে থাকা রহিমপুর সমবায় সমিতিটি এবার তৃণমূলের দখলে চলে যাওয়ায় বিরোধীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে পড়বে। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের এই জয়ের পর আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে দল আরও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে বলে আশা করছেন নেতৃত্বরা।

তবে এই জয় শুধুমাত্র সমবায় নির্বাচনের জয় নয়, বরং তৃণমূলের রাজনৈতিক অগ্রগতির দিশা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নমুখী প্রচার যে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখেও অবিচল রয়েছে, তা যেন এই ভোটের ফলাফলে প্রমাণিত। সমবায় সমিতি ভোটে তৃণমূলের এই সফলতা আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে তার দিকেই তাকিয়ে এখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here