সাফাই কর্মীর সততা , সোনার আংটি পেয়েও তা ফেরত দিলেন

0
47

“সাফাই কর্মীর সততা”গঙ্গারামপুর পুরসভার১৫নম্বর ওয়ার্ডের সেকাটোলা এলাকার দুস্থ আদিবাসী পরিবারের যুবক এক শহরবাসীর সোনার আংটি পেয়েও তা ফেরত দিলেন,সাধুবাদ জানালেন ভাই চেয়ারম্যান সহ সকলেই

শীতল চক্রবর্তী বালুরঘাট ৪জুলাই দক্ষিণ দিনাজপুর।গরিব দিনমজুর আদিবাসী যুবক সাফাই কর্মীর সততা।শহর এলাকার বাড়ি বাড়ি থেকে নোংরা আবর্জনা আনতে গিয়ে সোনার আংটি নোংরা আবর্জনার মধ্যে কুড়িয়ে পেয়েছিল সে।একদিন পরে তা ফেরত দিলেন এক অস্থায়ী সাফাই কর্মী। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা হলেও এমন সততায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৫নম্বর ওয়ার্ডের সেকাটোলা এলাকার বাসিন্দা সানু বেসরার এমন সততায় শহরবাসী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য তার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।এমন কাজ করে খুশি হয়েছেন ওই সাফাই কর্মী ও তার মা বলে জানান তারা।পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জানালেন,আদিবাসী পরিবারের গরীব ছেলে অস্থায়ী সাফাই কর্মীর এমন সততায় আমরা মুগ্ধ,ধন্যবাদ জানাই তাকে। গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৫নম্বর ওয়ার্ডের সেকাটোলা এলাকার বাসিন্দা সানু বেসরা,বাবা বদন বেসরা বেশ কিছুদিন আগে মারা গেছেন।পরিবারে রয়েছে মা ইবিলিনা সরেন,বোন সামিয়া,সানুর স্ত্রী।ঘর বলতে কোন মতে মাটির ঘরে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা রয়েছে তাদের।সানু বিয়ে করেছে গঙ্গারামপুরের কেশবপুর টুইটোলাতে।ওই পরিবারের অভাবের কথা মাথায় রেখে গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৫নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত কুমার দাস সানুকে পুরসভাতে অস্থায়ী দিনমজুর হিসেবে সাফাই কর্মীর কাজ দেন।প্রতিদিন সানু সেই কাজ করলে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে ২২০ টাকা করে পেয়ে থাকেন বলে পুরসভা সুত্রের খবর। প্রতিদিন পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাঁশি বাজিয়ে সাফাই এর কাজ করেন আদিবাসী ওই যুবক সানু বলে খবর।বৃহস্পতিবার সকালে গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৭নম্বর সুকান্ত নগর এলাকায় সাফাই এর জঞ্জাল আনতে গিয়েছিল সে। ১৭নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য নামে একজনের বাড়ি থেকে সে বাড়ি জমানো আবর্জনা তুলে নেন। কিছুক্ষণ পরে বিশেষভাবে দেখতে পান তার হাতে সোনার সেই আংটিতে নেই। বহু জায়গায় খুঁজেও তিনি তা পাননি বলে জানান তিনি।শুক্রবার আবারও ওই এলাকায় সানু গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৭নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তনগরে গিয়েছিলেন বাসিন্দাদের জমানো নোংরা আবর্জনা সাফাই করার জন্য তা আনতে।সেখানে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য নামে তার একটি সোনার আংটি খোয়া গেছে, সেটা সেভপেয়েছে কিনা জানতে চান?এমন প্রশ্ন শুনেই এক কথায় সানু জানালো , নোংরা আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে তিনি একটি আংটি পেয়েছে।যা তিনি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন।প্রায় ১০গ্রামের উপরে সোনার আংটি এভাবে ফেরত পাওয়া যায় শুনেই কিছুটা হলেও আটকে ওঠেন বিশ্বজিৎ বাবু। এদিন তিনি জানান, “একদিকে দিনমজুর সাফাই কর্মী ও আদিবাসী যুবকের এমন সততায় তিনি মুগ্ধ।সাফাই কর্মীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফেসবুক পোস্টও করেছেন বিশ্বজিৎ বাবু।” সোনার আংটি ফেরত দেওয়ার পরে সানু বেসরা জানান,”একদিন পরে যখন উনি বলেন উনার আংটি হারিয়েছে আমি খুঁজছিলাম সেটি কার তা ফেরত দিবো বলে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে এটা ফেরত দিয়েছি। মা-বাবা দেখানো পথেই কাজ করে যাব আগামীতেও। ওই সাফাই কর্মীর বিধবা মা ইবিলেনা সরেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত কুমার দাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,”পরিবারে অভাব রয়েছে ঠিকই, কিন্তু ছেলেকে মানুষ করেছি সততার সঙ্গে।অন্যের জিনিস কখনোই নিবিনা,ছেলে সোনার আংটি ফেরত দিয়ে খুবই ভালো কাজ করেছে বলে তিনি কান্না করে ফেলেন।” গঙ্গারামপুর পুর ১৫নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত কুমার দাস সানুর এমন কাজকে সাধুবাদ জানিয়ে জানান,”পরিবারের কথা মাথায় রেখেই সাফাই অভিযানের কাজ দেওয়া হয়েছে ওই যুবককে।পরিবারটি খুবই দুস্থ হলেও শততা রেখেছে,ধন্যবাদ জানাই তাকে। আদিবাসী দুস্থ পরিবারের যুবক হলেও সমাজ থেকে যে আজও মানবিকতা হারিয়ে যায়নি তার বড় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সানু নামে ওই যুবক।খুশি হয়েছেন সকলেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here