সকালে গেরুয়া, বিকেলে সবুজ! বালুরঘাটে ভাটপাড়ার তিন নেতাকে ঘিরে তোলপাড় রাজনীতি, বিভ্রান্ত নেতা কর্মীরাও
বালুরঘাট, ১১ অক্টোবর —— বালুরঘাট শহর লাগোয়া ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে রীতিমতো রাজনৈতিক ধাঁধা। সকালে গেরুয়া শিবিরে নাম, বিকেল হতেই সবুজ পতাকার মঞ্চে হাততালি— এমন ঘটনায় বিভ্রান্ত নেতা থেকে কর্মী, তোলপাড় জেলা রাজনীতি।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় এক মাস আগে। ১২ সেপ্টেম্বর ভাটপাড়া কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে তৃণমূল দখল করলেও রাতারাতি সমীকরণ বদলে যায়। অভিযোগ, তৃণমূলেরই দুই সক্রিয় সদস্য— একসময়ের বুথ সভাপতি নিত্যানন্দ পাল ও মুক্তি মণ্ডল— সমবায় ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করেন। ফলত, হাতছাড়া হয় ওই সমবায়।
অবাক করার মতো, ভোটের সেই ‘গেরুয়া সমর্থক’দেরই সম্প্রতি ফের দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের প্রকাশ্য মঞ্চে। তৃণমূলের ভাটপাড়া অঞ্চল কনভেনার তরুণ চক্রবর্তীকে তো দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে। এরপরেই বিজেপির দাবি, “তৃণমূল নেতাদের সমর্থনেই সমবায়ে জয় পেয়েছে বিজেপি।”
এই ঘটনা ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে ছড়িয়েছে গুঞ্জন ও ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠেছে— প্রকাশ্যে দলবিরোধী কাজ করেও কেন শাস্তিমুক্ত সেই নেতারা? দলের একাংশের মতে, এমন আচরণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
যদিও নিত্যানন্দ পাল দাবি করেন, “সমবায় ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করলেও আমি তৃণমূলেই আছি।” তরুণ চক্রবর্তীও বলেন, “আমি তৃণমূল করি, বিজেপি শুধু ছবি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
বালুরঘাট ব্লক তৃণমূল সভাপতি মলয় মণ্ডলের সাফ কথা, “যাদের ছবি দিয়ে বিজেপি প্রচার চালাচ্ছে, তারা কেউই বিজেপিতে যাননি। প্রত্যেকেই তৃণমূলে আছেন।”
অন্যদিকে বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি শুভ চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, “ওই তৃণমূল নেতারাই সমবায় ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করেছেন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভাটপাড়ার এই ‘দলবদল ধোঁয়াশা’ রাজ্য রাজনীতির চলতি প্রবণতারই প্রতিফলন— যেখানে সকালে এক রঙ, বিকেলে অন্য রঙে রঙিন হচ্ছে রাজনীতি।