হরিরামপুরের বিমলপাড়ায় সরকারি সাহায্যে না পেয়ে রেশনের চাল ও প্রতিবেশীদের সাহায্যে মুখ ও বধির প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে আদপেট খেয়ে দিন কাটছে বয়স্ক বাবার
শীতল চক্রবর্তী, গঙ্গারামপুর ,১৯মে ,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ-লক ডাউনের মধ্যে অসুস্থ প্রতিবন্ধী মুখ ও বধির ছেলেকে নিয়ে চরম সমস্যায় পরেছেন বয়স্ক অসহায় বাবা।কোন রকমে সরকারের দেওয়া রেশনের জিনিশ ও গ্রামবাসীদের সহযোগীতায় আদপেটে খেয়ে দিন যাপন করছে দুস্থ ও পরিবারটি বলে অভিযোগ। দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লকের সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিমলপাড়া এলাকার ঘটনা। সরকারিভাবে ভাতার জন্য আবেদন করেও বয়স্ক বাবা ও প্রতিবন্ধী মুখ ও বধির ছেলে তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তাই রেশনের চাল ও প্রতিবেশীদের সহযোগীতার দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় তাঁদের৷প্রশাসনের তরফে ওই অসহায় দুস্থ পরিবারের দুজনের ভাতা করে দেবার পাশাপাশি,সহৃদয় মানুষজনেরা যেন তাঁদের পাশে দাঁড়ায় তাঁর জন্য আবেদন করেছেন দুস্থ ওই পরিবারের বাবা ও মুখ ও বধির শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেটি। বিষয়টি জানার পরেই তাঁদের পাশের দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসন থেকে শুরু করে মন্ত্রীর প্রতিনিধি তথা জেলা তৃণমুল নেতাও।

হরিরামপুর ব্লকের সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিমলপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল সামাদের তিনকুলে কেউ নেই।স্ত্রী এক বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।একমাত্র ছেলে সাদ্দাম হোসেন(২৪)৭বছর আগে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী হয়ে যান।সেই সঙ্গে মুখে কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।কোন মতে একপায়ের উপরে ভর পরেই জীবন সংগ্রামে বেঁচে রয়েছেন ওই একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী যুবক বলে খবর।তাঁর পর থেকেই জীবনে বেঁচে থাকার জন্য বয়স্ক বাবা তাঁর দেখভাল শুরু করে । সংসার চলে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত করে।
আব্দুল সামাদের পরিবার সুত্রে খবর, একখানি মাটির তৈরি ঘরেই রোদ জলে ভিজে টিনের ছাদের তলায় মাথা গুজতে হয় বাবা ও ছেলের বলে খবর।সামাদ বাবুর বয়স হয়েছে ৬৩বছর। অভিযোগ বহু দিন আগে তিনি স্থানীয় সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বাধ্যকভাতার জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ তার।এমনি কয়েক বছর আগে ছেলে একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী হবার পরেও পঞ্চায়েতে ভাতার জন্য আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি বলে ওই প্রতিবন্ধী পরিবারের বয়স্ক সামাদ বাবুর অভিযোগ৷এদিন তাঁদের পরিবারে গিয়ে দেখা গেল তাঁদের করুন দশার দৃশ্য।
বয়স্ক আব্দুল সামাদ জানালেন, ভাতার জন্য দুজনই আবেদন করেছিলাম।কিন্তু কিছুই হল না।রেশনের যা জিনিশপত্র পাচ্ছি ও এলাকাবাসীদের সহযোগীতায় কোন রকমে বেঁচে আছি। জানিনা আগামী দিনে কি হবে সেটাই ভেবে পাচ্ছিনা। প্রশাসন ভাতার ব্যবস্থা করলে ওই পরিবারটি বোঁচে যায়৷
এলাকাবাসী আঞ্জুয়ারা বিবি ও জাসিরুদ্দীনেরা জানিয়েছেন, আমরা যতটা পেরেছি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।প্রশাসন যদি দুজনের ভাতার ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে ভালোই হয়।আর দুজন বেঁচে যাবে। সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জানিয়েছেন,এমনটা হবার কথা নয়,তবুও আমি বিষয়টি দেখছি।যত তারাতারি সম্ভব ওনারা যেন
ভাতা পান তাঁর ব্যবস্থা করা হবে। হরিরামপুর ব্লকের বিডিও পুজা দেবনাথ জানিয়েছেন, বিষয়টি আপনার কাছেই জানতে পারলাম।খুব তারাতারি এই সমস্যা মিটে যাব ওনারা যেন ভাতা পান তাঁর চেষ্টা করা হবে।

বিষয়টি জানার পরেই গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন তথা জেলা তৃণমুল নেতা মন্ত্রীর প্রতিনিধি প্রশান্ত মিত্র বলেন, এমনটা হবার কথা নয়।ওনারা দুজন যেন খুব তারাতারি ভাতা সরকারি সাহায্যে পান তার ব্যবস্থা করা হবে। এখন দেখার এটাই যে,এই সমস্যা কবে নাগাদ মিটে গিয়ে ওই দুস্থ পরিবারটি সরকারি সাহায্য পাই সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে হরিরামপুর সহ জেলাবাসী।