রায়গঞ্জের আদি সার্বজনীন দূর্গাপূজা

0
622

রায়গঞ্জ:—-আজ থেকে পাঁচশো বছর আগে বাংলাদেশের বনিকেরা বানিজ্য করতে এসে তাঁদের নৌকা বা বজরা নোঙর করতেন কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে। সেই বনিক সমাজের এক সওদাগর দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে কুলিক নদীর ধারে রাইগঞ্জ বন্দরে প্রচলন করেছিলেন দূর্গাপুজার। সেই পুজো আজ রায়গঞ্জ শহরের বন্দর এলাকার বাসিন্দাদের ” রাইগঞ্জ আদি সার্বজনীন দূর্গাপূজা ” হিসেবে পতিগনিত। সাধারন মানুষ থেকে এলাকার ব্যাবসায়ীরা চাঁদা দিয়ে এই পূজোর ব্যায় নির্বাহ করে থাকেন।

অধুনা বাংলাদেশের বনিক সমাজ বড় বড় নৌকা আর বজরা নিয়ে বানিজ্য করতে এসে নোঙর করতেন রায়গঞ্জের বন্দর কুলিক নদীর ঘাটে। কথিত আছে তাঁরাই রি ” রাইগঞ্জ আদি সার্বজনীন দূর্গোৎসবের প্রচলন করেছিলেন। এরপর কুলিক নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। দেশ ভাগ হয়ে এপার বাংলা ওপার বাংলা হয়েছে। এখন আর কুলিকের জলে ভাসেনা বাংলাদেশের বনিকদের বজরা। আসেনা বাংলাদেশের বনিকেরাও। কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়নি বনিকদের প্রচলন করা সেই দূর্গাপূজা। এলাকার বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে সার্বজনীনভাবে দূর্গাপুজো করে চলেছেন। রাইগঞ্জ আদি সার্বজনীন দূর্গাপূজা কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা রূপেশ সাহা জানিয়েছেন, তাদের সাত পূর্বপুরুষও জানাতে পারেননি এই পূজোর বয়স কত। তবে এখানকার দেবী দূর্গা খুবই জাগ্রত নিয়মনিষ্ঠা করে পুজো করা হয় এখানে। পাঁচশো বছরের পুরোনো সেই একই কাঠামোতে আজও দেবীর প্রতিমা নির্মাণ করা হয়ে থাকে। মহাষ্টমীতে হাজার হাজার ভোগের ডালা পড়ে এই মন্দিরে। পূজোর প্রচলন নিয়ে নানা মত রয়েছে। কেউ বলেন বাংলাদেশের বনিকেরা বানিজ্য করতে এসে রায়গঞ্জ কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে নোঙর করে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে দূর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন আবার কেউ বলেন, পঞ্জাব প্রদেশ থেকে এক সাধু এখানে এসে পঞ্চমুন্ডির আসন পেতে পুজো শুরু করেছিলেন। রাইগঞ্জ আদি সার্বজনীন দূর্গাপূজা নিয়ে রায়গঞ্জ শহর তথা উত্তর দিনাজপুর জেলার মানুষের কাছে একটা আলাদা উন্মাদনা রয়েছে। জাগ্রত বলে বহু দূর দূরান্ত থেকে পূন্যার্থীরা দূর্গাপূজায় ভোগ আর অঞ্জলি দিতে আসেন। এখানকার দেবীর কাছে মানত করলে তা পূরণ হয়। আর যে কারনে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে বন্দর আদি সার্বজনীন দূর্গোৎসবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here