মেয়েকে ধর্ষণে সৎ বাবার কুড়ি বছরের জেল দিল আদালত! দক্ষিণ দিনাজপুর পকসো আদালতের নজিরবিহীন রায়
বালুরঘাট, ২ ডিসেম্বর —– দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পকসো আদালতে এক ভয়াবহ নির্যাতনের মামলায় বেরিয়ে এল হৃদয় শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। ঘরের মধ্যেই নিজের সৎ মেয়েকে ধর্ষণ—এমন নৃশংস অপরাধে অভিযুক্তকে কুড়ি বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিল বিচারক শরণ্যা সেনপ্রসাদের এজলাস। পাশাপাশি, নিগৃহীতার শিক্ষা ও পুনর্বাসনের খরচ বাবদ ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছে আদালত—নাবালিকার ন্যায়বিচারে যা এক দৃষ্টান্ত।
ঘটনার সুত্রপাত গত ১৭ জুন ২০২৪। পরিচারিকার কাজে নিযুক্ত এক মহিলা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর নাবালিকা মেয়ের তীব্র পেটব্যথা। উদ্বিগ্ন মা তাকে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষা হতেই বিস্ফোরণ—মেয়েটি চার মাসের গর্ভবতী। মায়ের প্রশ্নে কেঁপে কেঁপে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর অভিযোগ—মায়ের অনুপস্থিতিতে সৎ বাবা টানা কয়েক মাস ধরে তাকে যৌন নির্যাতন করেছে। এরপরেই মেয়ের নির্যাতনের ঘটনা জানিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মা।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বালুরঘাট থানায় পকসো আইনের ৬ ধারায় মামলা রুজু হয়। বিচার চলাকালীন গর্ভপাত হলেও আদালত ভ্রূণটি বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে। পরবর্তী ডিএনএ পরীক্ষায় ভ্রূণ এবং অভিযুক্তের ডিএনএ-র হুবহু মিল পাওয়ায় প্রমাণিত হয় জঘন্য অপরাধটি। বিচারব্যবস্থায় যেটিকে অন্যতম শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত শনিবার আদালত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা হয়। সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী বলেন, আসামির যেহেতু অল্প বয়স তাই তাকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আদালত নিগৃহীতা নাবালিকার পড়াশোনা এবং অন্যান্য বিষয়ের জন্য তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ লক্ষ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে।




















