মেসোর হাতেই খুন! পঞ্চম শ্রেণির আদিবাসী ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার এক

0
275

মেসোর হাতেই খুন! পঞ্চম শ্রেণির আদিবাসী ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার এক, তোলপাড় কুমারগঞ্জ

বালুরঘাট, ৮ জুলাই ——পাঠ্যবই-খাতা নয়, মৃত্যুই ফিরল তার সঙ্গে! নিখোঁজের তিন দিন পর পুকুরে ভেসে উঠল পঞ্চম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী ছোট্ট বিটি হাসদার অর্ধনগ্ন নিথর দেহ। আর সেই নির্মম পরিণতির নেপথ্যে যে ব্যক্তি, সে আর কেউ নয়— পরিবারেরই এক সদস্য, মেসো বিজয় কিস্কু! দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে আদিবাসী নাবালিকা খুনের ঘটনায় জেলাজুড়ে শোক ও তীব্র ক্ষোভের পরিবেশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য—পারিবারিক শত্রুতার বলি হতে হয়েছে ছোট্ট স্কুলপড়ুয়া বিটি হাসদাকে। মঙ্গলবার বালুরঘাটে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল জানান, মৃতার আত্মীয় বিজয় কিস্কুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে খুনের কথা স্বীকার করেছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকেলে স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় বিটি। পরদিন বাবা অমিত হাসদা কুমারগঞ্জ থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। গোটা গ্রাম একজোট হয়ে শুরু করে খোঁজ। কিন্তু সোমবার দুপুরে মোহনা গ্রাম পঞ্চায়েতের জহরাপুকুর এলাকায় একটি পুকুরে ভেসে থাকতে দেখা যায় তার অর্ধনগ্ন দেহ। ছড়িয়ে পড়ে তীব্র চাঞ্চল্য, কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার।

জানা যায়, স্থানীয় বালুপাড়া নিবেদিতা গার্লস হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল বিটি। পুলিশ সূত্রে খবর, শেষবার তাকে দেখা গিয়েছিল অভিযুক্ত বিজয় কিস্কুর সঙ্গে। তারপরই বিজয়ের গতিবিধি ঘিরে সন্দেহ জোরদার হয়। পুলিশের দাবি, পারিবারিক পুরনো বিরোধ থেকেই সে নির্মমভাবে খুন করে মেয়েটিকে।

তবে ধর্ষণের অভিযোগ এখনও নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত সে বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ পুলিশ। মৃতার পরিবারের দাবি, মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।

ধৃতকে এদিন বালুরঘাট জেলা আদালতে পেশ করে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানায় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।

এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই থমথমে মোহনা গ্রাম। নিরুপায় বাবা অমিত বারবার ভেঙে পড়ছেন, কাঁদছেন, প্রশ্ন করছেন— “কোন শত্রুতা থাকলে বড়দের সঙ্গে থাকত! আমার মেয়েটার কী দোষ ছিল?”

একদিকে পুলিশ তদন্তে তৎপর, অন্যদিকে গ্রামবাসীদের জোর দাবি— এই নৃশংসতার পিছনে যদি আর কেউ থেকে থাকে, তাকেও যেন দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here