মুড়ি বিক্রেতার ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থান অধিকার করে তাক লাগালো রাজ্যবাসীকে, বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র বিজন বর্মনের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১০ জুন ———– মুড়ি বিক্রেতার ছেলে এবারে উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থান অধিকার করে নজর কাড়লো গোটা রাজ্যের। বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র বিজন বর্মনের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২। শুক্রবার সকালে এই খবর সামনে আসতেই রীতিমতো হইচই পড়ে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুরে। বিজন এর বাড়ি তপনের অভিরামপুরে হলেও বালুরঘাটের কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় মামার বাড়ি থেকে প্রতিদিন প্রায় দশ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বালুরঘাটে এসে পড়াশুনা করতো সে। ২০০৬ সালে শারীরিক অসুস্থতায় বাবা মারা যাবার পর থেকেই পরিবারে একমাত্র রোজগেরে বলতেই তার মা রিক্তা বর্মন। কখনো মুড়ি বেঁচে, আবার কখনো অন্যের জমিতে কাজ করেই একমাত্র ছেলেকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন ওই অসহায় হতদরিদ্র পরিবারটির। এদিন ছেলের এমন সাফল্যের কথা শুনে আনন্দে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে মুখে এক চামচ চিনি তুলে দিয়ে মিষ্টি মুখও করিয়েছেন মা রিক্তা বর্মন। আর্থিকভাবে দুর্বল বিজনের চোখে এখন স্বপ্ন বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশুনা করে কোন উচ্চপদস্থ অফিসার হবার। কিন্তু তার সেই স্বপ্নপুরনে আজ বাধা হয়ে দাড়িয়েছে সেই আর্থিক প্রতিবন্ধকতা। অন্যের জমিতে কাজ করে বা মুড়ি বিক্রি করে কি করে একমাত্র ছেলের স্বপ্ন পুরন করবেন সেই দুশ্চিন্তায় যেন ঘুম উড়েছে হতদরিদ্র অসহায় ওই পরিবারে।
বিজন বর্মন বলেন, মামার বাড়িতে থেকেই পড়াশুনা এতদিন চালিয়ে এসেছেন। পড়াশুনা ছাড়া গান শুনতে বা মোবাইল দেখতে তার খুব ভালো লাগে। বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশুনা করে আগামীতে কোন উচ্চ পদস্থ অফিসার হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চান।
মা রিক্তা বর্মন বলেন, জমিতে কাজ করলেই সন্ধ্যাবেলায় ছেলেকে পড়াশুনার কথা বলতেন তিনি। ছেলের দুচোখ ভরা স্বপ্ন কিভাবে তিনি পুরন করবেন সেই দুশ্চিন্তায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।