বালুরঘাট, ২১ সেপ্টেম্বর —— পুজোর আগে শহরজুড়ে শপিংয়ের ধুম। বাজার থেকে শপিং মল—সবখানেই জমজমাট ভিড়। কিন্তু এমন অনেক খুদে আছে, যাদের কাছে নতুন জামা–জুতো মানেই স্বপ্ন। বয়স মাত্র পাঁচ–ছয়, অথচ কোনোদিন শপিং মলে যাওয়া হয়নি। রবিবার সকালে বালুরঘাটের সুভাষ কর্নার এলাকার এক শপিং মলে সেই স্বপ্নই যেন বাস্তব হয়ে উঠল। প্রায় কুড়িটি খুদে ছেলে–মেয়ে নিজের হাতে বেছে নিল নতুন জামা ও জুতো, আর সেই খরচ হাসিমুখে মিটিয়ে দিলেন বালুরঘাট জি আর পি থানার পুলিশ কাকুরা।
দৃশ্যটা দেখে অবাক হলেন শপিং মলের ক্রেতারা। পুলিশ মানেই তো চোর ধরা, অপরাধ দমন বা দুষ্কৃতী আটকানো—এই পরিচয়ের বাইরে এমন মানবিক রূপ দেখে মুগ্ধ হলেন অনেকে। খুদেদের ঝলমলে হাসি আর আনন্দ দেখে চারপাশে যেন অন্যরকম আবহ তৈরি হলো।
বর্ষা সিং, সঞ্চিতা সিং আর সন্দীপ সিংয়ের মতো শিশুরা উচ্ছ্বাস লুকোতে পারল না। তাদের কথায়, “বাবা–মা এখনও জামা দেয়নি। আজ পুলিশ কাকুরা আমাদের নিয়ে এসে নিজেদের মতো জামা কিনতে দিয়েছে। পুজোয় এই জামা পরে ঘুরবো ভেবেই ভীষণ খুশি।”
এই অভিনব উদ্যোগের মূল উদ্যোক্তা বালুরঘাট জি আর পি থানার ওসি রতন সরকার। তিনি জানালেন, “স্টেশনের আশপাশে বহু দুস্থ শিশু আছে। ওদের পড়াশোনা শেখানোর জন্য আমরা নিজেরাই একটি কোচিং ক্যাম্প চালাই। পুজোয় যাতে নতুন জামা পরে ওরা আনন্দ করতে পারে, সেই কারণেই এই কেনাকাটা।”
ছোট্ট ছোট্ট জামার ব্যাগ হাতে যখন খুদেরা শপিং মল থেকে বেরোল, তাদের উজ্জ্বল হাসি যেন সবার মন ভরিয়ে দিল। পুজোর আসল আনন্দ শুধু আলোকসজ্জা বা কেনাকাটায় নয়—আনন্দের ভাগ করে নেওয়াতেই তা আরও অনেকগুণ বেড়ে যায়। রবিবারের এই সকাল সেই শিক্ষাই দিয়ে গেল বালুরঘাটকে