ভরসা ‘নার্স–বাবু’! ছ’মাস ধরে চিকিৎসকহীন হরিরামপুরের গোকর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র

0
162

ভরসা ‘নার্স–বাবু’! ছ’মাস ধরে চিকিৎসকহীন হরিরামপুরের গোকর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জীবনের দায় সামলাচ্ছেন নার্স

বালুরঘাট, ৩০ জুলাই —– চিকিৎসকের বদলে নার্স–বাবুর ভরসাতেই চলছে গোটা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র! দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম গোকর্ণে বিগত ছ’মাস ধরে নেই কোনও এমবিবিএস চিকিৎসক। অথচ, গ্রামে রোগীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। গরম লাগা, সর্দি–কাশি থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপ কিংবা রক্তে শর্করার সমস্যা—সবই সামলাচ্ছেন কেন্দ্রের একমাত্র পুরুষ নার্স অঙ্কুর জাফরি।

তাঁকেই গ্রামের বহু মানুষ ডাক্তার বলে মনে করেন। অনেকেই বলেন, “ওনার হাতেই ভগবানের স্পর্শ আছে, না হলে এতদিনে মরেই যেতাম!” স্বাস্থ্য দপ্তরের এমন গাফিলতিতে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

সোমবার কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নাজিমুল ইসলাম। তাঁর কথায়, “সুগার বেড়েছে দেখে এসেছিলাম। চিকিৎসক বলেই ওষুধ দিলেন যিনি, পরে শুনলাম তিনি নাকি নার্স!”

৩০ হাজারেরও বেশি মানুষের বাস এই গোকর্ণ এলাকায়। এমন একটা অঞ্চলে নিয়মিত চিকিৎসক না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ভরসা বলতে শুধু ওই এক নার্স। অথচ স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে দৃশ্যত নেই কোনও নজরদারি।

তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হরিরামপুর ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিজিৎ চৌধুরী। তাঁর দাবি, “চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে ঠিকই। তবে সপ্তাহে দু’-তিন দিন চিকিৎসক পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। আর নার্সরা তো সাধারণ পরিষেবা দিতেই পারেন।”

কিন্তু সাধারণ চিকিৎসা আর একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠার মধ্যে যে বিস্তর তফাৎ আছে, তা কি মানবে স্বাস্থ্য দফতর? প্রশ্ন উঠছে, যদি বড় কোনও জটিল রোগ দেখা দেয়? দুর্ঘটনা ঘটে? প্রসব যন্ত্রণায় কেউ আসেন? তখন কি এই নার্সই যথেষ্ট?

গ্রামবাসীরা সরব, তাদের দাবি—স্বাস্থ্যকেন্দ্র কি শুধু চার দেওয়াল আর ওষুধ রাখার স্টোরহাউস? গোকর্ণের মতো জনবহুল এলাকায় কেন নেই একজন স্থায়ী চিকিৎসক? না কি তাঁদের জীবনের মূল্যটাই কম? গোকর্ণের হাহাকার এখন গোটা জেলাজুড়েই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে—চিকিৎসক না থাকলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকবে কীসের জন্য?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here