ব্যাঙ্কের সঞ্চয়ও সেফ নয়! ফিক্সড ডিপোজিটে হানা প্রতারক চক্রের। কাজের ফাঁকে ওটিপি বলে সর্বস্ব খোয়ালেন কামারপাড়ার মোটরসাইকেল মেকানিক
বালুরঘাট, ৪ জুলাই —— ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের উপরও নজর এবার প্রতারকদের! একাধিক ওটিপি শেয়ার করে সর্বস্ব খোয়ালেন এক মোটর সাইকেল মেকানিক। কাজের ব্যস্ততার সুযোগে হিন্দিভাষী কথার বেশকিছু অর্থ বুঝতে না পেরেই একাধিক ওটিপি শেয়ার করেছেন বালুরঘাটের কামারপাড়া এলাকার বাসিন্দা বকুল মহন্ত। আর তারপরেই গায়েব হয়ে যায় কষ্টার্জিত ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ টাকা। মুহুর্তেই যে টাকা হারিয়ে মাথায় হাত পড়েছে ওই মোটর সাইকেল মেকানিকের। ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো আলোড়ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বালুরঘাটের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কামারপাড়া এলাকায়। ঘটনার পিছনে ব্যাঙ্ককর্মীদের একাংশের যোগসাজশ থাকবার অভিযোগ তুলেছেন প্রতারিত মোটর সাইকেল মেকানিক বকুল মহন্ত। তার অভিযোগ, এই ব্যাঙ্ক কর্মীদের যোগসাজশের ফলেই তাদের মতো গরীব, অর্ধশিক্ষিত মানুষ প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে সর্বসান্ত হচ্ছেন।
জানা গেছে কামারপাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় মোটর সাইকেল মেকানিক বকুল মহন্ত। রোজকার সামান্য উপার্জন থেকে জমিয়ে চারলক্ষেরও বেশি কিছু টাকা ব্যাঙ্কে জমান তিনি। যে টাকা কামারপাড়ার স্থানীয় বন্ধন ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিটও করেন তিনি। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে কিছু সুদ মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চারলক্ষ টাকা পাবার আশাতে দিনও গুনছিলেন ওই মোটর সাইকেল মেকানিক। কিন্তু এরই মধ্যে তার ফিক্সড ডিপোজিটের একাউন্টটি বন্ধ হবার ফোন আসতেই কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন বকুল। চাওয়া হয় প্যানকার্ড সহ বেশকিছু নম্বর, ফোনের ওপারে থাকা যে প্রতারকদের হাতে তুলে দিতেই ফাঁকা হয়ে যায় তার ফিক্সড ডিপোজিট। বকুলের দাবি, দীর্ঘসময় ধরে তারা ফোন করে তথ্য নেয়। এরপর হাতের কাছে থাকা ব্যাঙ্কে গিয়েই জানতে পারেন তার ফিক্সড ডিপোজিট থেকে সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছে প্রতারকরা। কিন্তু ফিক্সড ডিপোজিট থেকে কেউ কিভাবে টাকা আত্মসাৎ করতে পারে সেই প্রশ্ন তুলে কিছুটা অবাকও হয়েছেন ওই মোটর সাইকেল মেকানিক। তার দাবি এটা শুধুমাত্র তার নয়, অনেকেরই বিষয়টি অজানা। ঘটনা জানিয়ে বালুরঘাট সাইবার ক্রাইম থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই মোটরসাইকেল মেকানিক।
বকুল মহন্ত বলেন, ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা যে প্রতারকরা হাতিয়ে নিতে পারে এটা শুধুমাত্র তিনি একা নন, অনেকেই জানে না। এধরণের ঘটনার পিছনে ব্যাঙ্কের একাংশ লোকেরাই যুক্ত। ঘটনা জানিয়ে সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তার কষ্টার্জিত টাকা ফিরিয়ে দিক প্রশাসন এটাই চান তিনি।
এদিকে এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্তে নেমেছে বালুরঘাট সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।